অবিবেচনাপ্রসূতভাবে ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে প্রত্যক্ষ করে মনোযোগ দেওয়া দরকার হলেও অন্তর্বর্তী সরকার আগের মতোই পরোক্ষ করে নজর দিচ্ছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক।
গত শনিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শ্বেতপত্র ও অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্রবিষয়ক কমিটির প্রধান। দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সিম্পোজিয়ামের প্রথম অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
সরকার গত ৯ জানুয়ারি শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির অধ্যাদেশ জারি করে। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, কয়েকটি পণ্যে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী কিছু পদক্ষেপ অবশ্য নেওয়া হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হয়েছি এটা দেখে যে কীভাবে অবিবেচনাপ্রসূতভাবে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানো হলো। কোনো দেশে সরকার যদি কার্যকরভাবে কর আদায় করতে চায় তাহলে তাকে ধীরে ধীরে প্রত্যক্ষ করের দিকে নজর দিতে হবে। কিন্তু প্রত্যক্ষ কর আদায়ের কোনো পরিকল্পনা দেখছি না। প্রত্যক্ষ কর বাদ দিয়ে প্রথমেই পরোক্ষ করের দিকে ঝুঁকবেন। বিষয়টি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।’
সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক সুরক্ষার প্রতি নজর বাড়ানোর আহ্বান জানান দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির হার ধীর হয়ে পড়ছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না। আবার কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়ে গেছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত বাজেটের অধীনেই পরিচালিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার সংশোধিত বাজেট পেশ না করায় আগের সরকারের দিয়ে যাওয়া বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সূচকই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সুস্পষ্ট কোনো অর্থনৈতিক ইশতেহারও তৈরি করেনি।