স্পোর্টস ডেস্ক: ঠিক যতটা জমজমাট হওয়ার কথা ছিল, ততটা জমজমাট হয়ে উঠতে পারেনি এবারের বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন। টানা চতুর্থবারের মত সভাপতি প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিন। তার প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এবার রয়েছেন একাধিন প্রার্থী, অর্থ্যাৎ সাবেক দুই ফুটবলার- বাদল রায় এবং শফিকুল ইসলাম মানিক।
কিন্তু কাজী সালাউদ্দিনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুরু থেকেই দুর্বল ভেবে আসছেন বিশ্লেষকরা। সবচেয়ে বড় কারণ, বাকি দুই সভাপতি প্রার্থীই নির্বাচন করছেন এককভাবে, কোনো প্যানেল থেকে নয়। যদিও কাজী সালাউদ্দিন নিজে জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে তিনি কখনোই দুর্বল ভাবেন না।
বাদল রায় এবং শফিকুল ইসলাম মানিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন চান সবাই। পত্রিকার পাতা, সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়াল- সর্বক্ষেত্রে একটাই আওয়াজ, পরিবর্তন প্রয়োজন। বাংলাদেশের ফুটবলের ভাগ্য বদলাতে হলে এই পরিবর্তন না হলে হবে না। কিন্তু যে পরিবর্তন সবাই চান, সেই পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব?
কাজী সালাউদ্দিন নিজে এক সময়ের তুখোড় এবং দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তিনিও পরিবর্তনের আওয়াজ তুলে এসেছিলেন বাফুফের পরিচালনার দায়িত্বে। একটাই কৃতিত্ব তার, সারা বছর মাঠে ফুটবল রাখতে পেরেছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশের ফুটবলের আক্ষরিক কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।
এ কারণে বাফুফেতে তার একযুগের একনায়কতন্ত্রের পরিবর্তন চান সবাই। কিন্তু যে সমন্বয় পরিষদ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে, সেই পরিষদের সভাপতি প্রার্থীই নেই। শেখ মোহাম্মদ আসলামের নেতৃত্বে তাদের সর্বোচ্চ প্রার্থী হচ্ছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি। যদিও নির্বাচনের আগেরদিন রাতে, হঠাৎই বাদল রায় নিজেকে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তাতে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নড়চড় হবে কি না জানা নেই।
তবুও বোদ্ধারা মনে করছেন, প্রার্থী যেহেতু তিনজন এবং সবাই সাবেক তারকা ফুটবলার- এ কারণে এবার ব্যালটের লড়াইটা হবে অনেক বেশি। ফুটবলের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা মাত্র ১৩৯ জনের হাতে। এরা সবাই এখন পাঁচ তারকা হোটেলে এক ছাদের নিচে। শুক্রবারই ভোটাররা উপস্থিত হয়ে গেছেন প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে। আজ সেখানেই ভোট। ব্যালটের মাধ্যমে আগামী চার বছর ফুটবল পরিচালনার দায়িত্ব যে কোনো একজনের কাঁধে তুলে দেবেন বাফুফের কাউন্সিলররা।
প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দিনের শুরুতে রয়েছে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এর পর দুপুরে শুরু হবে ব্যালট বক্সে ভোটের লড়াই। রাত গড়াতেই জানা যাবে আগামী চার বছরের জন্য কারা আসছেন বাফুফে পরিচালনায়।
বাফুফে নির্বাচনে কাজী মো. সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত পরিষদ ও শেখ মোহাম্মদ আসলামের নেতৃত্বাধীন সমন্বয় পরিষদ উভয় প্যানেলই জয়ের আশা ব্যক্ত করেছে। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে শফিকুল ইসলাম মানিক ও সহসভাপতি পদে তাবিথ আউয়ালও আত্মবিশ্বাসী। সভাপতি পদে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদল রায় ভোটের মাঠে থাকবেন না ঘোষণা দিলেও শেষ মুহূর্তে লড়াইয়ে ফিরে এসে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আজ সকাল ১১টায় শুরু হবে বাফুফের এজিএম, বেলা ২টা থেকে শুরু হবে ভোট। চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশনার ভোট গ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পান্ন করেছে। বাফুফে সেরেছে বার্ষিক সাধারণ সভার প্রস্তুতি।
বাফুফের নির্বাচনে ১৩৯ ভোটারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৪ ভোট জেলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৩ ভোট ক্লাবের। বিভাগের আছে ৮ ভোট, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬, শিক্ষা বোর্ডের ৫ এবং একটি করে কোচেস অ্যাসোসিয়েশন, রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থার। এসব কাউন্সিলররাই বাফুফের ২১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠনে ভোটের মাধ্যমে রায় দেবেন।