মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
প্রথমবারের মতো সেনাসদরে প্রধান উপদেষ্টা দেশ পুনর্গঠনে মার্কিন সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হবে : চিফ প্রসিকিউটর ফের খুলে দেওয়া হলো কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পীল ওয়ের ১৬ টি জলকপাট ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থান রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি বড় গণঅভ্যুত্থানেই বিএনপি লাভবান মার্কিন প্রতিনিধিদল ঢাকা আসছে আজ ইরাকে অভিযানে ইসলামিক স্টেটের চার নেতা নিহত : সেন্টকম গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে সিলেটে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি বিএনপির রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে শায়খ আমহাদুল্লাহর স্ট্যাটাস অনলাইনে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে চিৎমরমে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত তুরাগে ছাত্র হত্যা – সস্ত্রাস, চাঁদাবাজ নৈরাজ্য ও দখলদারদের প্রতিহতে বিএনপির প্রতিবাদ সভা পাইকগাছায় আদালত জমি রেজিষ্ট্রেশন করে দিলেও দখল ছাড়ছেন না প্রতিপক্ষ ঘাটাইলে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে কিশোরকে হত্যা নাজিরপুরে পানিতে পড়ে মারা যাওয়া শিশুর পরিবার’কে আর্থিক সহায়তা দিলেন ইউএনও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী বাংলাদেশিদের অবৈধ সম্পদ ফেরত আনতে সহযোগিতার আশ্বাস সুইজারল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দলকে প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা রাষ্ট্র সংস্কারে কমিশন গঠন জন মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন : এটর্নি জেনারেল আগামী একশ’ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রশ্নে যা বললেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসুন নতুন বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করি : ব্যবসায়ীদের প্রতি ড. ইউনূস কর্ণফুলী পেপার মিলস্ লিমিটেড এর উৎপাদন চালু রাখার দাবিতে মানববন্ধন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসকের দায়িত্বে হাফিজুর রহমান লক্ষ্মীপুরে বন্যায় কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাবে, আশা ফখরুলের পাইকগাছায় স্হানীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাজেট প্রনয়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত গাজায় স্কুলে ইসরাইলি হামলায় নিহত ১৮ ৭ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ ১৪ সেপ্টেম্বর শহীদদের স্মরণসভা হচ্ছে না : নাহিদ

আনি এরনোর ‘ক্লিনড আউট’ এবং ‘হ্যাপেনিং’

অনলাইন ডেস্ক :
রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ৬:১০ অপরাহ্ন

ঢাকা প্রতিদিন সাহিত্য ডেস্ক : নোবেলজয়ী লেখক আনি এরনোর উপন্যাসগুলোর ধারাবাহিক রিভিউর মধ্য থেকে আজ প্রকাশিত হলো ‘ক্লিনড আউট’ এবং ‘হ্যাপেনিং’। রিভিউ দুটি নেয়া হয়েছে ‘কমপ্লিট রিভিউ’ থেকে।

ক্লিনড আউট

‘সুতরাং আমি জড়িয়ে পড়েছিলাম, আষ্টেপৃষ্টে জড়ানো যাকে বলে; এমনকি আমার গর্ভের নাড়ি দিয়েও শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে পড়ি। এমন নয় যে সবকিছু ছলনার কারণে হয়েছে, হয়েছে আমারই কারণে।’

ক্লিনড আউট উপন্যাসের প্রচ্ছদক্লিনড আউট উপন্যাসের প্রচ্ছদ
বলা যায় এই কথাগুলোই আনি এরনোর প্রথম উপন্যাসের ‘ক্লিনড আউট’-এর সারকথা। উপন্যাসের কথক ২০ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছাত্রী ডেনিস লেসু। যিনি সবেমাত্র গর্ভপাত করেছেন। গর্ভপাতের পেছনের গল্পই ধীরে ধীরে উপন্যাসের মূল অংশে নিয়ে আসে। যেখানে ডেনিস তার জীবনকে পুনরায় পরীক্ষা করে। উপন্যাসের গভীরে ডেনিস অজান্তেই লেখকের ছদ্মবেশ ধারণ করে একটা সমান্তরাল গল্পের আভাস দেয় আমাদের। তখন আনি এরনো আর ডেনিস লেসুকে আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
‘ক্লিনড আউট’-এ আনি এরনোর অন্যান্য উপন্যাসের মতোই একটা পরিচিত প্রেক্ষাপট দেখতে পাই : পারিবারিক দোকান ও ক্যাফে নির্ভর জীবনযাপন, শৈশব, নিম্নবিত্ত অবস্থায় মা-বাবার সহজ জীবনযাপন, শেকড় থেকে পালানো বা অন্যভাবে বললে পড়াশোনা শেষে নিজের ক্যারিয়ারের মাধ্যমে মুক্তি পাওয়ার গল্পই। তবুও তার প্রতিটি উপন্যাসের কিছু নিজস্বতা আছে। এখনকার গল্পটি পরিব্যাপ্ত ও নিয়ন্ত্রিত।

ডেনিস স্কুলে যাওয়া শুরু করলে বুঝতে পারে তার সামাজিক পরিবেশ-পরিস্থিতি সহপাঠীদের মধ্যবিত্ত সমাজ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন সমাজের মধ্যে সে অস্বস্তি ও হীনমন্যতা নিয়ে দিনযাপন করতে থাকে। সে সহপাঠীদের সাথে যেমন মিশতে পারছে না, তেমনি নিজের শিকড়কেও ত্যাগ করতে পারছে না। এই নিয়ে সারাক্ষণ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে ডেনিস। শেষপর্যন্ত সে লেখাপড়া শিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছায় কিন্তু সেখানে তার স্কুল-কলেজের সহপাঠীরা নেই। এভাবে সবকিছুর সাথে ডেনিসের বিচ্ছিন্নতা বাড়তে থাকে।

সুখী শৈশব, কর্মজীবী এবং মধ্যবিত্তের জীবনের একটি আকর্ষণীয় চিত্র পাওয়া যায় এই ‘ক্লিনড আউট’ উপন্যাসে। তাছাড়া বাবা-মায়ের সাথে কন্যা সন্তানদের জটিলতার যে চিত্র পাওয়া যায় তা এখনো প্রাসঙ্গিক এবং তৎকালীন পরিবার-কাঠামোর কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। এছাড়াও ডেরিসের বেড়ে ওঠার সাথে সাথে তার যৌন অভিজ্ঞতা এবং কৌতূহলী মনোভাব আনি এরনো বিশেষভাবে উপস্থাপন করেছেন।

‘হ্যাপেনিং’

‘হ্যাপেনিং’ উপন্যাসটিকে আনি এরনোর অতীতের একটুকরো পুনরুত্থান বলা যায়। উপন্যাসে অবৈধ গর্ভপাতকে কেন্দ্র করে অতীতে ঘটে যাওয়া তার মানসিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার বর্ণনা পাওয়া যায়। যা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত নয়। কারণ তার প্রথম উপন্যাস ‘ক্লিনড আউট’-এ এই বিষয়টি স্পষ্টভাবেই উল্লেখ রয়েছে। ‘হ্যাপেনিং’কে এরনোর নিছক অন্তর্মুখী কল্পকাহিনী বা সরল স্মৃতিকথাও বলা যাবে না। এরনো তার স্মৃতিকে অর্থাৎ জীবনকে মনে রাখার জন্য সুনিপুণ দক্ষতার সাথে আলাদা প্রকাশভঙ্গি তৈরি করেছেন যা শিল্পসম্মত এবং অনন্য। বলতে গেলে ‘হ্যাপেনিং’ তার জীবনের এই পর্বের একটি বিশেষ সাহিত্যিক পরীক্ষা।

হ্যাপেনিং উপন্যাসের প্রচ্ছদহ্যাপেনিং উপন্যাসের প্রচ্ছদ
উপন্যাসটি একটি সমসাময়িক গল্প দিয়ে শুরু হয়। যেখানে এরনো আবার যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার কারণে এইডস কিংবা এই সংক্রান্ত অন্যান্য যৌন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন- এমন সংশয় থেকে ভালো চিকিৎসার খোঁজ নিতে থাকেন।

তিনি ১৯৬৩-৬৪ সালের দিকে ফিরে যান। তখন তিনি রুয়েনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া অবস্থায় গর্ভবতী হয়েছিলেন। সেই সময়েও ফ্রান্সে গর্ভপাত অবৈধ ছিল। ফলে তাকে জটিল এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিলো। এরনো এই পুরো ঘটনাটি একটি পর্বে বর্ণনা করেছেন। কীভাবে তিনি গর্ভবতী হওয়ার কথা বুঝতে পারেন, তা থেকে শুরু করে গর্ভপাতের পরের সময় পর্যন্ত কীভাবে জীবনযাপন করেন তা তিনি শান্তভাবে বিশদ বিবরণের মাধ্যমে পুরো পরিস্থিতেই এই ছোট উপন্যাসে তুলে ধরেছেন। সেইসাথে তার নিজের মানসিক অবস্থাও বর্ণনা করেছেন।

গর্ভপাত বরাবরের মতোই কঠিন এবং মানসিকভাবে পীড়াদায়ক। এ সম্পর্কে এরনো উপন্যাসে বলেন ‘…যদি আমি এই উদ্যেগে ব্যর্থ হই, তবে আমি নারীর জীবনকে থমকে রাখার জন্য এবং পুরুষের আধিপত্যশীল বিশ্বকে ক্ষমা করার জন্য দোষী হব।’
পুরো উপন্যাস জুড়ে এরনো নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তার অতীত সম্পর্কে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কীভাবে এবং কেনো সে তার অতীতের এমন পরিস্থিতি নিয়ে লিখিতভাবে কাজ করছেন, কীভাবে এমন একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে পুনরায় আকার দিচ্ছেন তার সুস্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় উপন্যাসে। যখন লেখক তার ব্যক্তিগত এই সত্যকে প্রকাশ করেন তখন তিনি জানেন তা সম্পূর্ণরূপে তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, সার্বজনীন হয়ে উঠবে। তবুও তিনি গল্পে নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।

ঘটনাটি নিজেই গর্ভপাতের মতো। যৌন মিলনের চেয়েও গর্ভপাত করাটা স্পষ্টতই এরনোর জন্য প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সূচনা। সাহায্যের জন্য না পারে বাবা-মায়ের কাছে যেতে, না পারে তার যৌনসঙ্গীর কাছে যেতে। সমস্যার সমাধান নিজ হাতে নিজের জন্য করতে হবে ভেবে তিনি সংকল্পবদ্ধ হন। যদিও এটি একটি কঠিন পদক্ষেপ, তবুও তিনি সক্ষমতা বজায় রাখেন।

কৈশোরে গর্ভপাত ভয়ঙ্কর স্পর্শকাতর বিষয়। তবুও ‘হ্যাপেনিং’ উপন্যাসে অনেক উপায়ে আনি এরনো ব্যক্তিগত সংকোচ বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ থেকেছেন। নিজের অপ্রীতিকর অবস্থার উপর ভিত্তি করে লেখা এই উপন্যাসের সাথে তার সমগ্র রচনার সম্পর্ক পাওয়া যায়। অর্থাৎ তার বৃহৎ জীবনের আরেকটি দিক হলো এই উপন্যাস।
ঢাকা প্রতিদিন/এআর


এই বিভাগের আরো খবর