ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি গ্রামের অলি মিয়ার বাড়িতে বিয়ের উৎসব চলাকালে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এলাকার সন্ত্রাসী মনাক মিয়া ও তার সশস্ত্র বাহিনী আকস্মিক এক হামলা চালিয়ে সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। ওই নারকীয় হামলা ও তাণ্ডবে ওই পরিবারের কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে মনাক বাহিনীর গুলিতে গুরুতর আহত ৪ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- বড়িকান্দি গ্রামের অলি মিয়া (৫০) তার বড় ভাই খলিল মিয়া (৬০), ছোট ছেলে আসিফ মিয়া (১৬) ও ভাগ্নে নাছির মিয়া (২০)।
খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) ওবায়দুর রহমান, নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এ ঘটনায় আহত অলি মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম সোমবার রাতে সন্ত্রাসী মনাকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় একটি মামলা করেছেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান রাত ১১টার দিকে কালের কণ্ঠকে জানান, ‘হামলার ঘটনার পর পরবর্তী যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে অলি মিয়ার বাড়িতে এসআই রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫ জন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি শান্ত রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘বড়িকান্দি গ্রামের অলি মিয়ার সৌদি প্রবাসী ছেলে ইমরান মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে সোমবার ওই বাড়িতে বরযাত্রীসহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে রীতিমতো উৎসব চলছিল। কিন্তু বর বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রাক্কালে বেলা ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী নূরজাহানপুর গ্রামের সন্ত্রাসী মনাক মিয়ার নেতৃত্বে তার বাহিনী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিয়ে বাড়িতে আচমকা হামলা চালায়। ওই সময় মনাক বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৬ জন আহত হন।
এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আজিজুল হক বলেন, ‘শুনেছি, আকস্মিক ওই হামলায় গুলিবিদ্ধ হওযার পর অলি মিয়াসহ চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ছাড়া হামলার সময় বিয়ে বাড়িতে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
বড়িকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লাল মিয়া বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না। তবে এসে সব শুনেছি। মনাক ডাকাত সম্পর্কে তো আপনারা (সাংবাদিক) সবই জানেন। তবে বিয়ে বাড়িতে এমন হামলা ঠিক হয়নি।
’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, ‘মনাক এলাকার সবচেয়ে ভয়ানক সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে বহু মামলা আছে। সর্বশেষ কিছুদিন আগে সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু গত মাসের মাঝামাঝি সে আবার জামিনে বের হয়ে আসার পর এলাকায় চরম ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’
কি কারণে হঠাৎ বিয়ে বাড়িতে এই নারকীয় হামলা হলো? এ প্রশ্নের জবাবে ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে এসে এডিশনাল এসপি ওবায়দুর রহমান কালের কণ্ঠকে রাতে বলেন, ‘অলি মিয়ার বাড়ির একটি বড় ব্যাটারি চুরি হওয়ায় অলির বাড়ির লোকজন মনাকের বাহিনীকে ইঙ্গিত করে ফেসবুকে লেখালেখি করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামিনে বের হওয়া মনাক ও তার বাহিনী ওই জঘন্য হামলা চালায় বলে জানতে পেরেছি।’ তিনি জানান, ‘আহত সবাই গুলিবিদ্ধ কিনা, সেটি এখনো আমরা নিশ্চিত নই।’
নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক থানায় মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে রাতে বলেন, ‘কুখ্যাত সন্ত্রাসী মনাকের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যাসহ বহু মামলা থানায় রয়েছে। আজকের ঘটনার পর তাকে ধরতে তার বাড়িতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ