মাহফুজ ইসলাম সবুজ, বরিশাল ব্যুরো:
বরিশাল জেলায় প্রায় অর্ধ শতাধিক অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটার মধ্যে বরিশাল সদর উপজেলার ৭নং চরকাউয়া ইউনিয়নের চরকরনজী গ্রামের মেসার্স খান ব্রিকস অন্যতম। কোন নিয়মনীতির তোকায়াকা না করে ভাটা মালিকের নিজের খামখেয়ালীভাবে ইটভাটা চালানোর ফলে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। পুরে যাচ্ছে ফসলি জমি, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খান ব্রীকস নামের ইটভাটায় কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ,কম দামে পাচ্ছে খেজুর গ্রাছ। আর ইট তৈরির মৌসুমকে ঘিরে ভাটায় মজুদ করা হয়েছে বিশাল আকারের মাটির স্তুুপ। ইতোমধ্যে ভাটায় ইট পোড়ানোর লক্ষ্যে আগুন দেওয়া হয়েছে। বিধি অনুযায়ী অটোভাটা করার কথা থাকলেও প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে মেসার্স খান ব্রিকস অবৈধ ড্রাম চিমনির ভাটা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত ১৯৯২ সালের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে ‘কৃষি-জমিতে ইটভাটা নির্মাণ দন্ডনীয় অপরাধ’। কিন্তু মেসার্স খান ব্রিকসের মালিক মোঃ মোখলেস খান তা মানছে না। খোজ নিয়ে জানা যায়, মেসার্স খান ব্রিকসের মালিক মো. মোখলেস খান ভাটায় ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিশাল মজুদ করেছে। কোথাও কয়লা চোখে পড়েনি জানতে চাইলে বলেন আমাদের কয়লা দরকার হয় না। কেবল গাছপালা ও বাঁশের মোথা, ইটের রং ভালো হওয়ার জন্য খেজুরের গ্রাছ দিয়েই ইট পোড়ানো হচ্ছে। ভাটা মালিক স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় মানছেন না কোন আইনকানুন। প্রশাসনও পারছেনা এ অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করতে, দেদারছে কাঠ পোড়ানোর কারণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ। ভাটাসংলগ্ন এলাকার কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেভাবে কাঠের কালো ধোঁয়া হচ্ছে, তাতে স্বাস্থ্যহানি এবং পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। তেমনি কমছে গাছপালা। আমরা প্রশাসনের কাছে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো বন্ধের দাবি জানাই। এ ব্যাপারে ভাটা মালিক মোকলেস খান বলেন, আমি সকল সরকারী দপ্তর ম্যানেজ করেই ভাটায় ইট পোড়াই। কে কি বলল, আর কার কি হলো তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই ভাই। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, জমির ৪ থেকে ৬ ইি মাটিতে বেশি পুষ্টি থাকে। যা ফসল উৎপাদনে খুবই সহায়ক। কৃষকদের অস্বচ্ছলতার সুযোগে ভাটা মালিক জমির মালিকদের উদ্বুদ্ধ করে ইট তৈরির জন্য কৃষি জমির টপ সয়েল কিনছেন। ভাটায় প্রতিবছর টপ সয়েল ব্যবহার করায় জমির পুষ্টিগুণ ও উৎপাদন শক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। আর কৃষকরা জমিতে সারের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে, ’ব্যয়’ পোহাতে হচ্ছে কৃসকদে। এভাবে টপ সয়েল তুলে নেওয়া অব্যাহত থাকলে ভতিষ্যতে জমিগুলো পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান সরকার জানান এ ধরনের অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
