সোমালিয়ায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরা জাহাজ এমভি আবদুল্লায় থাকা ইব্রাহিম খলিল উল্যাহ বিপ্লব দীর্ঘ দুই মাস অপেক্ষার পর নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা শেষে পরিবারের মাঝে ফিরেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তিনি ফেনী শহরের নাজির রোডের মা-মনি ম্যানশনে পৌঁছেন।
অপেক্ষার প্রহর শেষে তাকে জড়িয়ে ধরেন তার মা ও স্ত্রী-সন্তানরা। এ সময় তাদের চোখে-মুখে আনন্দাশ্রু দেখা যায়। খবর পেয়ে ফেনী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম তানজীম তার বাসায় যান। সেখানে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ও শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। বিপ্লব দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মমারিজপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি ওই জাহাজে ইলিক্ট্রিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন।
তিনি জানান, “মা-বাবা ও স্ত্রী ছাড়াও পরিবারে তার দুই শিশু সন্তান দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া রেদোয়ান বিন ইব্রাহিম ও দুই বছর বয়সী রিহান বিন ইব্রাহিম রয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ, পরিবারের কাছে ফিরতে পেয়ে অনেক ভালো লাগতেছে। জলদস্যুদের কাছে জিম্মি থাকার সময় পরিবারের কাছে ফিরতে পারবো কখনো ভাবিনি। আল্লাহ আমায় ফেরত আনছে। অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।”
ইব্রাহিমের মা রৌশনারা বেগম বলেন, এ বৃদ্ধ বয়সে গত দুই মাস কান্নাকাটি আর খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছি। আজ ছেলে ফিরে আসায় যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। প্রতিটি দিন ছেলের চিন্তায় কেটেছে তার। ছেলে ফিরে আশায় আনন্দে মেতেছে পুরো পরিবার।
তার স্ত্রী উম্মে সালমা সোনিয়া বলেন, এর আগে সর্বোচ্চ ৮ মাস পর্যন্ত তার স্বামী জাহাজে ছিলেন। তবে এবারের ঘরে ফেরা অন্য সময়ের চেয়ে একদম ভিন্ন। গত দুই মাস নানা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিন পার করেছি। আজ আমাদের জন্য ঈদের আনন্দের চেয়েও বেশি।
প্রসঙ্গত; গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এ জাহাজটি ২৩ নাবিকসহ ছিনতাই করেছিল সামালিয়ার দস্যুরা। ৩২ দিন জিম্মি থাকার পর মুক্তিপণ নিয়ে ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় তারা। এরপর জাহাজটি প্রথমে আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে পণ্য খালাস শেষে আরেকটি বন্দর থেকে নতুন পণ্য বোঝাই করে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল জাহাজটি। ১৩ দিনের মাথায় গত শনিবার জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমা এসে পৌঁছায়।