গরমে তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি আড্ডা, পার্টি, পিকনিক কিংবা বাসাবাড়ির যে কোনো অনুষ্ঠানে অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এনার্জি ড্রিংকস ও সফট ড্রিংকস (কোমল পানীয়)। কেউ কেউ ভাত-মাংস, এমনকি পানির মতো গ্রহণ করেন এগুলো। স্কুলের টিফিনে শিশুদের খাবার কিংবা কোমল পানীয় দিয়ে অতিথিকে আপ্যায়ন— যেন মানুষের রীতি বা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড়দের জন্য এগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, অথচ শিশুদের ক্ষেত্রে? এটি নিয়ে কেউ কি চিন্তা করেছেন?
এসব পানীয়ের প্রতি আসক্তির বিষয়টি উঠে আসে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে (২০২২)। সেখানে দেশের ৩০ হাজার ৩৭৫টি পরিবারের কাছ থেকে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। খাদ্য গ্রহণসংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হয় ছয় থেকে ২৩ মাস বয়সী দুই হাজার ৫৭৮টি শিশুর কাছ থেকে। জরিপের ফলে উঠে আসে, ৩২ শতাংশ শিশু তথ্য সংগ্রহের আগের দিন কোমল পানীয় পান করেছেন। ৪৯ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত চিনি ও লবণজাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছেন।
গবেষণায় কোমল পানীয়তে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এনার্জি ড্রিংকসে এর মাত্রা আরও বেশি। সেখানে বলা হয়েছে, ক্যাফেইনের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদিত সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ১৪৫ পিপিএম হলেও একটি এনার্জি ড্রিংকসে এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে ৩২১.৭ পিপিএম। এ ছাড়া এক বোতল (২৫০ মিলি) কোমল পানীয়তে সিসার মাত্রা মিলেছে যথাক্রমে ০.০৫৩ ও ০.০৪৮ মিলিগ্রাম
সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষণাতেও কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকসের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি উঠে এসেছে। গবেষণায় কোমল পানীয়তে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এনার্জি ড্রিংকসে এর মাত্রা আরও বেশি। সেখানে বলা হয়েছে, ক্যাফেইনের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদিত সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ১৪৫ পিপিএম হলেও একটি এনার্জি ড্রিংকসে এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে ৩২১.৭ পিপিএম। এ ছাড়া এক বোতল (২৫০ মিলি) কোমল পানীয়তে সিসার মাত্রা মিলেছে যথাক্রমে ০.০৫৩ ও ০.০৪৮ মিলিগ্রাম।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, নমুনার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ পানীয়ের পিএইচ (পটেনশিয়াল অব হাইড্রোজেন) ও অ্যাসিটিক মাত্রা আসে ৩-এর নিচে, যা দাঁতের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ২৫০ মিলিলিটারের (মিলি) কোমল পানীয়তে চিনির পরিমাণ ২০.৮ থেকে ২৮.৮ গ্রাম এবং এনার্জি ড্রিংকে তা ২২.৬ থেকে ৩৭.০ গ্রাম পর্যন্ত পাওয়া গেছে। এটি একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দৈনিক সর্বোচ্চ মাত্রা পূরণের সমান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য দিনে সর্বোচ্চ চিনি গ্রহণের মাত্রা ২৫ গ্রাম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এনার্জি ড্রিংকসে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইন থাকে যার পরিমাণ হয় ২৫০ মিলিলিটার (মিলি) ক্যানে অন্তত ৮০ মিলিগ্রাম (মিগ্রা)। যেখানে ৩৩০ মিলির একটি কোকাকোলা ক্যানে এর পরিমাণ থাকে ৩২ মিগ্রা। সেখানে ৬০ মিলির একটি এনার্জি ড্রিংকসের বোতলে ১৬০ মিগ্রা পর্যন্ত ক্যাফেইন থাকতে পারে। বেশি মাত্রার ক্যাফেইন উদ্বেগ ও আতঙ্কিত হওয়ার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। এটি রক্তচাপও বাড়িয়ে দেয়।
এনার্জি ড্রিংকসে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইন থাকে যার পরিমাণ হয় ২৫০ মিলিলিটার (মিলি) ক্যানে অন্তত ৮০ মিলিগ্রাম (মিগ্রা)। যেখানে ৩৩০ মিলির একটি কোকাকোলা ক্যানে এর পরিমাণ থাকে ৩২ মিগ্রা। সেখানে ৬০ মিলির একটি এনার্জি ড্রিংকসের বোতলে ১৬০ মিগ্রা পর্যন্ত ক্যাফেইন থাকতে পারে। বেশি মাত্রার ক্যাফেইন উদ্বেগ ও আতঙ্কিত হওয়ার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। এটি রক্তচাপও বাড়িয়ে দেয়
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ঢাকা প্রতিদিনকে বলেন, বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকস বাজারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু আছে কার্বনেটেড ওয়াটার, কিছু কার্বনেটেড ড্রিংকস ও সফট ড্রিংকস। এগুলোর ক্ষতির মাত্রাও ভিন্ন। এসব পানীয়তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। চিনির কারণে বাচ্চাদের ওজন দ্রুত বেড়ে যায়। বাংলাদেশে উৎপাদিত যেসব ড্রিংকস বা জুস আছে, সেগুলোতে ফলমূলের ব্যবহার খুবই কম থাকে- ডা. সোহেল রেজা / ছবি- সংগৃহীত
‘ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে বাচ্চাসহ বয়স্ক ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি দ্রুত বাড়ে। এমনকি কোমল পানীয় বাচ্চাদের মধ্যে এক ধরনের আসক্তিও তৈরি করে। ঠিক তামাকের নিকোটিনের মতো। এ কারণে বাচ্চারা একবার অভ্যস্ত হলে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।’
ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ঢাকা প্রতিদিনকে আরো বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত যেসব ড্রিংকস বা জুস আছে, সেগুলোতে ফলমূলের ব্যবহার খুবই কম থাকে। ব্যবহার হয় মূলত কেমিক্যাল, সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে চিনি। তাও আসল চিনি নয়। চিনির নামে ফ্রুক্টোজ, যা সিরাপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে খুবই উচ্চমাত্রার ক্যালরি থাকে, যা শরীরে মেটাবলিক প্রবলেম (বিপাকীয় সমস্যা) তৈরি করে।
বাংলাদেশে উৎপাদিত যেসব ড্রিংকস বা জুস আছে, সেগুলোতে ফলমূলের ব্যবহার খুবই কম থাকে। ব্যবহার হয় মূলত কেমিক্যাল, সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে চিনি। তাও আসল চিনি নয়। চিনির নামে ফ্রুক্টোজ, যা সিরাপ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে খুবই উচ্চমাত্রার ক্যালরি থাকে, যা শরীরে মেটাবলিক প্রবলেম তৈরি করে। এসব পানীয়তে যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলো কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এগুলো বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ঢাকা প্রতিদিনকে কোমল পানীয় খেলে সরাসরি হার্টের কোনো ঝুঁকি আছে কি না— জানতে চাইলে হার্ট ফাউন্ডেশনের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘হার্টের প্রবলেম তখনই হয় যখন ওজন বেড়ে যায়, রক্তচাপ বেড়ে যায়, ডায়াবেটিসের মাত্র বেড়ে যায়। কোমল পানীয়তে সব ধরনের ঝুঁকি রয়েছে।’ দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকসে কোনো পুষ্টিকর উপাদান নেই। বরং দেহের জন্য ক্ষতিকর কিছু রাসায়নিক উপাদান আছে। বেশকিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, কোমল পানীয় দাঁতের ক্ষয়রোগ সৃষ্টি করে, মাড়ি দুর্বল করে। এমনকি এর প্রভাবে হাড়, পেশি ও লিভারে জটিল রোগ দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয় শিশু-কিশোররা।
‘গবেষকরা বলেন, কোমল পানীয়ের অন্যতম উপাদান হচ্ছে ক্যাফেইন। এটি অত্যন্ত আসক্তিকর মাদক। এটি শুধু স্নায়ুতন্ত্র নয় দেহকেও কৃত্রিমভাবে উত্তেজিত করে। হৃৎস্পন্দন ও সাময়িক বুদ্ধিবৃত্তি বাড়ায়, অবসন্ন ভাব বা ক্লান্তি-শ্রান্তি দূর করে। ছোটরা তাই একবার খেলে আবারও খেতে চায়।’
এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, কোমল পানীয় আপনি মাঝেমধ্যে দু-একবার খেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, বেশি কোমল পানীয় খেলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যায়। বেশি ক্যাফেইন শরীরে ঢোকার ফলে তা কিডনি, মূত্রাশয় ও পাকস্থলির ক্যান্সার এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে।
দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ঢাকা প্রতিদিনকে
কোমল পানীয় আপনি মাঝেমধ্যে দু-একবার খেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, বেশি কোমল পানীয় খেলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যায়। বেশি ক্যাফেইন শরীরে ঢোকার ফলে তা কিডনি, মূত্রাশয় ও পাকস্থলির ক্যান্সার এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে
অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ‘কেউ যদি মাঝেমধ্যে শখ করে দু-এক চুমুক খান, তাহলে কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত খান, অতিমাত্রায় খান এবং সেটি অভ্যাসে পরিণত করেন, সেক্ষেত্রে যে কোনো সমস্যা হতে পারে।’
নরমাল পানি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকস পরিহার করাই সবচেয়ে ভালো। আমরা আসলে কখনওই পরীক্ষা করে দেখি না যে এগুলোতে কী থাকে? বায়োকেমিক্যাল জিনিস থাকতে পারে, সিম্পেথিক জিনিস থাকতে পারে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মঞ্জুর আল মোর্শেদ চৌধুরী ঢাকা প্রতিদিনকে বলেন, এনার্জি ড্রিংকস ও কোমল পানীয় যেহেতু কার্বনেটেড ওয়াটার, এতে অবশ্যই ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। এটি কখনওই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এটি বড়দের জন্য ক্ষতিকর, ছোটদের ক্ষেত্রে তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মঞ্জুর আল মোর্শেদ চৌধুরী ঢাকা প্রতিদিনকে বলেন, ‘পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আমাদের দেশে যে টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করা হয়, সেখানে যে মাত্রার পিএইচ (পাওয়ার অব হাইড্রোজেন) ব্যবহার হয়, কোমল পানীয়তেও একই মাত্রায় এটি আছে। গবেষণায় এটিও দেখা গেছে, টয়লেট ক্লিনার হিসেবে কোমল পানীয় ব্যবহার করলে সমানভাবে টয়লেট পরিষ্কার হয়ে যায়। তার মানে, আপনাকে বুঝতে হবে যে কোমল পানীয়টা শরীরের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর।’
পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আমাদের দেশে যে টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করা হয়, সেখানে যে মাত্রার পিএইচ (পাওয়ার অব হাইড্রোজেন) ব্যবহার হয়, কোমল পানীয়তেও একই মাত্রায় এটি আছে। গবেষণায় এটিও দেখা গেছে, টয়লেট ক্লিনার হিসেবে কোমল পানীয় ব্যবহার করলে সমানভাবে টয়লেট পরিষ্কার হয়ে যায়। তার মানে, আপনাকে বুঝতে হবে যে কোমল পানীয়টা শরীরের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর। ‘শুধু বাচ্চা নয়, কেউ যদি খালি পেটে কোমল পানীয় খান, তাহলে তার মধ্যে অস্বস্তিভাব অনুভূত হবে। কারণ, খালি পেটে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সঙ্গে কার্বনেটেড ওয়াটার যাচ্ছে। এটি ছোট বাচ্চাদের জন্য বেশ ভয়ঙ্কর।’
নিউট্রিশন সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, একসময় আমরা চিন্তা করতাম যে, আমাদের বাচ্চারা আন্ডারওয়েট (ওজনে কম) ছিল। যেটিকে আমরা ম্যালনিউট্রিশন (অপুষ্টি) বলতাম। যে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী বাচ্চার ওজন থাকার কথা, সেটি আগে থাকত না। বর্তমান প্রজন্মে এসে বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে যে ওজন প্রয়োজন তার চেয়েও বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটিই কার্বনেটেড ওয়াটার ও ফাস্টফুডের বিরূপ প্রভাব।