গত ৩১আগস্ট ( শনিবার) মধ্য রাত হতে কাপ্তাই লেকে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাইয়ের জেলেদের মাছ ধরা শুরু হয়েছে । তবে এ বছর ছোট মাছের পরিমাণ বেশি বড় মাছের দেখা নেই বললেই চলে। কাপ্তাই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা ১৪ টন ২ শত ৫৮ কেজি মাছ জেলেরা অবতরণ করেন। যেখানে প্রথমদিন গত বছরের তুলনায় কম মাছ আহরণ হয়।
মাছ আহরণে সাথে যুক্ত জেলেরা জানান, প্রথম দিন তারা শুধুমাত্র জেটিঘাট সংলগ্ন আশেপাশের কয়েকটি পয়েন্ট হতে তাঁরা মাছ ধরে এই অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রির জন্য এনেছিলেন। গতকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে কিছু পরিমাণ মাছ আসলেও বেলা ২ টা থেকে কাপ্তাই অবতরণ কেন্দ্রে জেলেরা মৎস্য আহরণ ও বিপণন কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭ টায় কাপ্তাই অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা কাপ্তাই লেক হতে ইঞ্জিন চালিত বোটে করে সেই ভোর ৬ টা হতে লংগদুর মাইনিমুখ, বরকল, বিলাইছড়ি হতে আইড়, কাঁচকি, চাপিলা, চিংড়ি সহ বিভিন্ন জাতের মাছ ধরে এনে অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। এবার রুই, কাতলা, মৃগেল সহ বড় মাছের সংখ্যা তেমন দেখা যায় নাই। তবে প্রচুর পরিমাণ কাচকি ও চাপালি মাছ দেখা গেছে এই অবতরণ কেন্দ্রে। এসময় এই অবতরণ কেন্দ্রে জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়।
এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয়, কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউল হক জিয়া ও সদস্য মো: জাহাঙ্গীর এর সাথে। তাঁরা বলেন, আজকে এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সকাল হতে চাপিলা, কাচকি এবং চিংড়ি জাতের মাছ আসতেছে। তবে বড় মাছের দেখা এখনোও পাই নাই।
মাছ ব্যবসায়ী কাঞ্চন দাশ ও মো: নুর নবী বলেন, এখানে চাপিলা, কাচকি ও বাচা মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় পাইকারি মাছ বিক্রেতা মো: নজরুল এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এখান থেকে মাছ কিনে আমি ট্রাকে করে বরফ দিয়ে লেকের মাছ রংপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল সহ বিভিন্ন জেলায় খুচরা মাছ বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। লেকের মাছ সুস্বাদু, তাই চাহিদা বেশি।
কাপ্তাই মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের উপ কেন্দ্র প্রধান জসিম উদ্দিন বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ আহরণ হয়েছিল ১৪ টন ২ শত ৫৮ কেজি। এদিন রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৫ টাকা। গত ২ সেপ্টেম্বর মৎস্য আহরণ হয়েছিল ২০ টন ৮ শত ৯৫ কেজি এবং ঐদিন রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৬ শত ৫ টাকা। তিনি আরোও বলেন, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টা হতে ৮ টা পর্যন্ত এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ৩ টন পর্যন্ত মাছ আহরণ হয়েছে। তবে দিন শেষে আরোও অনেক মাছ আসবে এই কেন্দ্রে।
উপ কেন্দ্র প্রধান মো: জসিম উদ্দিন আরোও বলেন, লেকে অতিরিক্ত পানি থাকায় বড় মাছ কম ধরা পড়ছে, তবে ছোট মাছ যেমন কাচকি, চাপিলা মাছ বেশী ধরা পড়ছে।
উল্লেখ্য যে কাপ্তাই লেকে মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি বছরের গত ২৫ এপ্রিল তারিখ হতে মৎস্য ধরা ও বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ৩১ আগস্ট কাপ্তাই লেকে মধ্য রাত হতে মাছ ধরা এবং ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৬ টা হতে রাঙামাটির বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়।