নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় কিছু স্কুল, অফিস এবং গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিপাহ ভাইরাসের যে ভ্যারিয়েন্টটি কেরালায় ছড়াচ্ছে সেটিকে তারা বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাস বলে দাবি করেছে।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জ রাজ্যের বিধানসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন, যদিও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বা তাদের সংস্থাগুলো এখনও সেটি নিশ্চিত করেনি।
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকে বিশেষজ্ঞদের দল ইতোমধ্যেই কেরালাতে গিয়ে পৌঁছেছেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছেন। মোবাইল ল্যাবরেটরি স্থাপন করে ও বাদুড়দের ওপর জরিপ চালিয়ে তারা ভাইরাসটির প্রকৃতি ও ধরন নিশ্চিত করতে চাইছেন।
কেরালা সরকার জানাচ্ছে এই দফায় তাদের রাজ্যে ভাইরাসের যে ধরন বা ভ্যারিয়েন্টটির প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে সেটির সঙ্গে বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্টের মিল আছে। সে কারণেই ‘বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্ট’ বলা হচ্ছে।
নামে বাংলাদেশ থাকলেও কোনো বাংলাদেশির থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে— বিষয়টি এমন নয়। কেরালার থোনাক্কালে ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ভাইরোলজির প্রধান ই শ্রীকুমার বলেন, আক্রান্ত এলাকায় কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ চলছে, তবে বাংলাদেশ থেকে আগত কারও মাধ্যমে কেরালাতে ওই ভাইরাস ছড়িয়েছে সেটা কিন্তু বলা হচ্ছে না। ভাইরাসের ধরনটির সঙ্গে নিপাহর বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্টের প্রচুর মিল আছে বলেই সেটিকে ওই নামে শনাক্ত করা হচ্ছে।
কেরালার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, এই বাংলাদেশ ভ্যারিয়েন্ট নিপাহ্ ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য মূলত তিনটি।
প্রথমত, এটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর ক্ষমতা রাখে।
দ্বিতীয়ত, এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে মর্টালিটি রেট, অর্থাৎ আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি।
তৃতীয়ত, এটি কিন্তু তেমন সংক্রামক নয় – সুতরাং ইনফেকশন খুব একটা দ্রুত বেগে ছড়ায় না।
কেরালায় গত পাঁচ বছরের মধ্যে এ নিয়ে চতুর্থবার নিপাহ্ ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ঘটল, যার মোকাবিলায় রাজ্য সরকার এবার শুরু থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।