ক্লাস্টার ভিত্তিতে, মালচিং পেপার ব্যবহার করে আগাম টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শুকুরউল্লারগাঁও এর কৃষকরা। গতকাল মঙ্গলবার (০৪ ফ্রেবুয়ারী ) সরেজমিনে কথা বলে জানা যায় তরুণ কৃষক আব্দুল মান্নান এ বছর ১০ বিঘা জমিতে আগাম টমেটো আবাদ করেছেন। তার উৎপাদন খরছ হয়েছে প্রায় ২১ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন তিনি।
কৃষক আব্দুল মান্নান গত বছর ৬ বিঘা জমিতে আগাম জাতের টমেটোর আবাদ করেন। খরচ বাদে তাঁর লাভ হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। নতুন এই পদ্ধতিতে আগাম টমেটো চাষ করে কৃষক আব্দুল মান্নানের ব্যাপক সাফল্যে ও অধিক লাভবান হওয়ায় ইতিমধ্যে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলে।
এতে আব্দুল মান্নানের পাশাপাশি আমিনা বেগম ও টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ হন। কৃষানী আমিনা বেগম বলেন,হীড বাংলাদেশ এর সহায়তা নিয়ে ২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন তিনি। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ৭ লক্ষ টাকার টমেটো বিক্রি করেন।
একই গ্রামের কৃষানী মর্জিনা বেগমও ২ বিঘা জমিতে টমেটো চাষাবাদ করেন। খরছ বাদে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আয় করে সফলতা পেয়েছেন তিনিও।
এভাবেই শুকুরউল্লাহগাঁও এর আব্দুল মান্নান, আমিনা বেগম, মর্জিনা বেগম, আব্দুস সালাম, খায়রুদ্দিন, হোসনে আরা বেগম, জামাল হোসেন, আলাউদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, হেলাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন ও মহুব আলীর মতো কৃষকরা টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
হীড বাংলাদেশ এর কৃষি কর্মকর্তা সোহেল সিকদার বলেন, কৃষি ইউনিটের কৃষিখাতে হীড বাংলাদেশ এর বাস্তবায়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় টমেটো চাষীরা এখন স্বাবলম্বী। মালচিং পেপার, জৈবসার, বীজ, রাসায়নিক সার, জৈব বালাই নাশক, হলুদ কার্ড, ফেরোমন ফাঁদ, প্রশিক্ষণ, নিয়মিত ক্ষেত পরির্দশন ও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও ক্লাস্টার ভিত্তিতে মালচিং পেপার ব্যবহার করে আধুনিক পদ্ধতিতে আগাম চাষাবাদ করায় টমেটো চাষীরা প্রথম দিকে বেশি দামে বিক্রি করতে সক্ষম হন এবং পরিবহন খরচ অনেকটা সাশ্রয় হয়েছে।
শুকুরউল্লাহগাঁও এর ১২ জন চাষী ১১৮৫ শতাংশ জমিতে ক্লাস্টার ভিত্তিতে, মালচিং পেপার ব্যবহার করে টমেটো চাষ করেছেন।এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭৭ লক্ষ টাকা। বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। এখন যদি আবহাওয়া অনূকূলে থাকে আর বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে আরো ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বিক্রি করা সম্ভব হবে এমনটাই আশা প্রকাশ করছেন টমেটো চাষীরা।