শামীম আহমেদ তালুকদার, সুনামগঞ্জ থেকে:
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার খুরমা দক্ষিণ ইউনিয়নে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হতদরিদ্র কৃষককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার রাত ১২টায় ইউনিয়নের ছেগাপাড়া গ্রামের মৃত. তবারক আলীর ছেলে রহিদ আলীকে (২৫) নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ছাতক থানায় নিয়ে আসা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, থানার এসআই আনোয়ারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য রহিদ আলীকে গ্রেফতার করেন। মা বাবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দীর্ঘদিন উমান প্রবাসে ছিলেন রহিদ আলী। কিন্তু ভাগ্য সহায়ক না হওয়ায় তাকে দেশে ফিরতে হয়। দুই বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী সন্তান নিয়ে কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। রহিদ আলীর মামা একই গ্রামের আব্দুস ছুফান এর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সালিশ বৈঠকে পক্ষে রায়ও পেয়েছেন রহিদ আলী। কিন্তু আব্দুস ছুফান এর কিছুই তুয়াক্কা করছেন না। গত দুই সপ্তাহ আগে গ্রামের পাশে একটি ডোবা সেচ করে মাছ ধরতে যান রহিদ আলী ও তার ভাই। এসময় অতর্কিতভাবে হামলা করেন আব্দুস ছুফান ও তার সহযোগীরা।
হতদরিদ্র রহিদ আলীর বৃদ্ধা মা সুফিয়া বেগমের অভিযোগ, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমার ভাই আব্দুস ছুফান পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দরজা বিহীন ভাঙা ঘরে মদ রেখে দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।
এ বিষয়ে দড়ারপাড় গ্রামের ছুনু মিয়া, মছদ্দর আলী, শহিদ আহমদ, জুবের আলী, শেওলাপাড়া গ্রামের ছোরাব আলী, আছদ্দর আলীসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আমাদের জানা মতে রহিদ আলী একজন ভালো ছেলে। হয় তো সে গরিব। তাকে কখনও ধুমপান পর্যন্ত করতে দেখিনি। মদ আর মদের ব্যবসা সে প্রশ্নই উঠে না।
খুরমা দক্ষিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বির এর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ছাতক থানার এসআই আনোয়ার বলেন, রহিদ আলীকে মদসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। যে ঘর থেকে মদ পাওয়া গেছে, সে ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে তারা বাধা দেয়। তারা বলেন এই ঘরে কিছু নেই। এতে সন্দেহ হয়।
ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ১৬ বোতল বিদেশি মদসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতকে (গতকাল) সোমবার সুনামগঞ্জ কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
