ক্রীড়াবিদদের খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির অঙ্গনে পদার্পণ নতুন কিছু নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবসর নেওয়ার পর অনেকে পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ হন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর ব্যতিক্রমও হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা জাতীয় দলে খেলা অবস্থাতেই সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। মাশরাফির পর বর্তমান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও সেই পথেই হাঁটছেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে মাশরাফি নড়াইল-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। নির্বাচনে জিতে জাতীয় সংসদের সদস্য হন মাশরাফি। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার অধিনায়কত্বেই বাংলাদেশ ২০১৯ বিশ্বকাপ ওয়ানডে খেলেছিল। সংসদ সদস্য হওয়ার পর দেশকে অধিনায়কত্ব করার কৃতিত্ব বাংলাদেশে সেটিই ছিল প্রথম। ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন।
বছর পাঁচেক আগে তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফির দলীয় মনোনয়ন ও সংসদ সদস্য হওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। অনেক ক্রিকেটপ্রেমী এর সমালোচনাও করেছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, নির্বাচন কমিশনের আইনে কোনো বাধা বা নির্দেশনা না থাকায় মাশরাফি সংসদ সদস্য হওয়ার পরেও জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করে গেছেন। তাই সাকিব বর্তমান ওয়ানডে দলের অধিনায়ক এবং তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আইনত কোনো বাধা নেই।
সরকারের বেতনভুক্ত কর্মকর্তা আমলারা অবসর নেওয়ার তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় জাতীয় নির্বাচন করতে। আমলাদের ক্ষেত্রে এ রকম নিয়ম থাকলেও জাতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এমন কোনো নিয়ম নেই। সংবিধান অনুসারে ২৫ বছর বয়স্ক বাংলাদেশি নাগরিক সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তির আওতায়। ক্রিকেট বোর্ড থেকে মাসিক বেতন এবং ম্যাচ ফি পেয়ে থাকেন।
সাকিব বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হলেও অনেক ঘটনায় নিন্দিত। এজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও বেশ কয়েকবারই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। জাতীয় সংসদ সদস্য হওয়ার পর ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সাকিবের সম্পর্ক কি রকম দাড়ায় সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে ক্রীড়াঙ্গন। খেলার পাশাপাশি সাকিব বাণিজ্যিক অনকে কাজের সঙ্গে জড়িত। আবার তার পরিবার থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। খেলা, পরিবার, বাণিজ্যিক কাজের সঙ্গে রাজনীতি ও জনসেবায় কতটুকু সময় দিতে পারেন এটাও দেখার অপেক্ষায় সাকিব ভক্তরা।
সাকিব,মাশরাফির আগে ক্রীড়াবিদদের মধ্য থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার সংখ্যাটা কম নয়। মেজর হাফিজ, হাসানুল হক ইনু, মাহবুব আরা বেগম গিনি, নাইমুর রহমান দুর্জয়,আব্দুস সালাম মুর্শেদী সহ আরো অনেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। তারা সবাই অবশ্য খেলা ছাড়ার পরই জাতীয় সংসদে জায়গা করে নিয়েছেন।