রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সালথায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত্যু বেড়ে ৭ আজ সন্ধ্যায় টি-টোয়েন্টিতে নামছে বাংলাদেশ-ভারত গিগাবাইট অরাস এক্স৮৭০ ও এক্স৮৭০ই মাদারবোর্ড: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শক্তি দিয়ে কম্পিউটিংয়ের নতুন যুগের সূচনা উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেলেন শিউলী রোজা শিক্ষক শিক্ষার্থীদর মেরুদণ্ড, আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস পলিথিন বন্ধে অধিদপ্তর-ম্যাজিস্ট্রেট মিলে টিম হচ্ছে উপস্থাপক হিসেবে হাজির হচ্ছেন অপু বিশ্বাস ১৮ অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা বিপিএলে সাকিবের খেলা নিয়ে যা বলছে রংপুর বাংলাদেশের সোনার খনি হচ্ছে ইলিশ সম্পদ : ফরিদা আখতার টাকায় থাকবে না শেখ মুজিবের ছবি, নতুন নোট নকশার প্রস্তাব সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক অমিতাভের নতুন কাজে পূজা চেরি আক্কেলপুরে সবুজে ছেয়ে গেছে আমনের বিস্তীর্ণ মাঠ পাইকগাছায় বাড়ির মালিক ও রাজমিস্ত্রীর বউ বদল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন পাইকগাছায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নান্দাইল সাংবাদিক সমিতি(বাসাস) কমিটি গঠিত সভাপতি খসরু ও সম্পাদক হাবিব প্রশাসনের মধ্যে ‘স্বৈরাচারের ভূত’ বসে আছে : বিএনপি সাতক্ষীরা সীমান্তে শুটারগান ও গুলি উদ্ধার ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত টানা বৃষ্টিতে ফের ডুবছে নোয়াখালী, পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ মুরাদনগরে সাংবাদিকতার মানোন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন করিম সরকার স্ত্রী হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে শরণখোলায় দূর্গা পূজা পালন উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল অবহেলিত থাকবে না : ক্রীড়া উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র ৭ দিনের রিমান্ডে

জুলাই বিপ্লব নিয়ে যা বললেন ঢাবি শিবির সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৩১ অপরাহ্ন

সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে যাচ্ছেন দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে আসা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া সাদিক কায়েমের ফেসবুক পোস্টটি সময়ের আলোর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো :

‘‘দীর্ঘ ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন এবং কর্তৃত্ববাদী সরকারের কারণে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ছিল ভিক্টিম। দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে কমবেশি প্রত্যেক শ্রেণীপেশার মানুষ এ বাকশালী শাসনে নিপীড়িত-নির্যাতিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট কর্তৃক ভিক্টিম হওয়া থেকে বাদ যায়নি খোদ (জ্ঞাত/অজ্ঞাতসারে) ফ্যাসিবাদের ভিত্তি স্থাপনকারীরাও।

জুলাই বিপ্লব ছিল সর্বস্তরের সকল নিপীড়িতের চূড়ান্ত সম্মিলিত বিক্ষুব্ধ বিস্ফোরণ।

এই গণবিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমাদের শহীদেরা। খোদা প্রদত্ত জানকে কোরবানি করে তারা সাম্য ও ইনসানিয়াত ভিত্তিক একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জিম্মাদারি আমাদের হাতে অর্পণ করে গেছেন।

এই আন্দোলন শহীদ আবু সাঈদের রক্তের উপর দাঁড়ানো আন্দোলন, শহীদ মীর মুগ্ধের স্মৃতির উপর দাঁড়ানো আন্দোলন। যে রিকশাওয়ালা ভাই ক্রমাগত দুঃশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে শহীদ হয়েছেন তার কুরবানির উপর দাঁড়ানো আন্দোলন। সহস্রাধিক শহীদ আমাদের পথ দেখিয়েছেন এক নতুন মঞ্জিলে-মাকসুদ: Bangladesh 2.0

এই আন্দোলনে যেমন অবদান ছিলো সমাজের উঁচুতলার মানুষের, আবার আন্দোলনের ভ্যানগার্ড ছিলো সমাজের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীরাও। ইংলিশ মিডিয়ামের টেক স্যাভি কিড থেকে শুরু করে কওমি-আলিয়ার তালেবে এলেম, শাহবাগ-ধানমন্ডি-মিরপুর-উত্তরা-সাভার থেকে শুরু করে বাংলার স্টালিনগ্রাদ হয়ে ওঠা যাত্রাবাড়ি, শহর-নগর, গ্রাম-গ্রামান্তরে এই বিপ্লব ছিল আপনার, আমার, সবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনা থেকে বিপ্লবের আওয়াজ ছড়িয়ে পড়েছিলো প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল-কলেজে। এ আওয়াজ রুদ্ধপ্রচেষ্টা রুখে দিয়েছিলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়ে উঠেছিলো গণমানুষের কন্ঠস্বর। এই বিপ্লব ছিল শ্রমিক, দিনমজুরের। আন্দোলন ছিল সাহসী সাংবাদিক, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসী ভাইবোনদেরও। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রবাসীরা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন দেশ ও জাতির মুক্তির স্লোগান তুলে।

যারা আমাদের পছন্দ করেন, অপছন্দ করেন, ঘৃণা করেন; যারা আমার সংগঠন ছাত্রশিবিরকে ভালোবাসেন, অবজ্ঞা করেন, ঘৃণা করেন- কার্যত সবার অবদানেই আমরা পেয়েছি ৩৬শে জুলাইয়ের মহাবিজয়। ফতহে মক্কা, ফতহে বাঙ্গালা, ফতহে কুসতুনতিনিয়ার সিলসিলা ধরে আমরা পেয়েছি ফতহে গণভবন- যেদিন গণভবন সত্যিই গণের ভবনে পরিণত হয়।

প্রতিটা ইনসান রাস্তায় নেমে এসেছিলো, ‘আমার ভাই মরলো কেন’ সওয়ালের জবাব চাইতে। এই প্রশ্নের প্রতিউত্তরে যখন তাদের উপর হায়েনার মত হিংস্রভাবে ঝাপিয়ে পড়া হয়েছে, তখনই আমাদের শহীদেরা দাঁড়িয়ে গেছেন লড়াইয়ের ভ্যানগার্ড হিসেবে।

এই আন্দোলনের সমস্ত কৃতিত্ব আমাদের শহীদ ও হাত-পা-চোখ হারানোসহ নানাভাবে আহত ভাই-বোনের। যাদেরকে বুলেটের গুলি কিংবা জুলুম কোনকিছুই দমিয়ে রাখতে পারে নি। তারা একজন শহীদ হওয়ার পরে আরেকজন দাঁড়িয়ে গেছেন দু:শাসন ও স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে।

শত জুলুম এবং স্লো পয়জনিং এর মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়া, জামায়াতে ইসলামী সহ দেড় যুগ ধরে তিলে তিলে ইনকিলাবের জমিন চাষ করা মজলুম সকল বিরোধী দল, ইলিয়াস আলী, মাইকেল চাকমা, ব্যারিস্টার আরমান ও জেনারেল আযমি থেকে শুরু করে ফাঁসি-গুম-ক্রসফায়ারে হারিয়ে যাওয়া আমাদের সকল সিপাহসালার ও সহযোদ্ধা, শাপলা-শাহবাগ দ্বন্দ্বকে পাশে রেখে শহুরে মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর সমর্থন, ভাইদের হেফাজতের ঢাল হিসাবে বোনদের বুনইয়ানুম মারসুস তথা সীসাঢালা প্রাচীর হিসাবে দাঁড়িয়ে যাওয়া, ফ্যাসিস্টদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও সর্বপ্রকার ব্ল্যাকমেইলকে উপেক্ষা করে পাহাড়-সমতলের ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের সহযোদ্ধা হয়ে ওঠা, মাদ্রাসার তালেবে এলেম এবং আলেম-ওলামার অকাতরে জান-মালের কোরবানি, এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল ছাত্র সংগঠনের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এই ইনকিলাবের স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিয়েছে।

বিডিআর বিদ্রোহ থেকে শুরু করে আয়নাঘর পর্যন্ত, শাপলা থেকে শুরু করে মোদীবিরোধী আন্দোলন পর্যন্ত, শেয়ারবাজারে নি:স্ব মজলুম পরিবার থেকে শুরু করে সাংবাদিক সাগর-রুনির সন্তান মেঘ পর্যন্ত – ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ছিল জুলাই ইনকেলাবের জ্বালানি। আর শহীদরা ছিলেন সীমাহীন উজ্জ্বল স্ফুলিঙ্গ।

শহীদ-গাজীর স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা যারা জিন্দা আছি তাদের সামনে এক সুদীর্ঘ পথ। আমাদের শহীদদের স্বপ্ন পূরণের জন্য একটি সুখী এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। আমরা কামিয়াব না হলে বিফল হয়ে যাবে ’৪৭, ’৭১ ও ’২৪ এর সকল শহীদের রক্ত। আমাদের দৃষ্টিশক্তি হারানো ভাইদের দৃষ্টিশক্তি কোরবানি বিফলে চলে যাবে, যদি আমরা বৈষম্যহীন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তুলতে না পারি।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের শহীদদের প্রত্যেককে শাহদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। তাদের রক্তের হক আদায় করে, আমাদের একটি সুখী-সমৃদ্ধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ এবং ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার তৌফিক দিন। আমিন।’’


এই বিভাগের আরো খবর