সিরাজগঞ্জের তাড়াশে হাঁসের খামার করে সংসারের হাল ধরেছেন গৃহবধূ সোনিয়া খাতুন। ৩০টি হাঁস দিয়ে শুরু করে এখন তার খামারে ১২০০ হাঁস রয়েছে। পাশাপাশি বাড়িতে স্থাপন করেছেন একটি মিনি হ্যাচারি। এতে ডিম থেকে বাচ্চাও উৎপাদন করছেন তিনি। যা সরবরাহ করছেন সিরাজগঞ্জ জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায়।
জানা যায়, গৃহবধূ সোনিয়া খাতুন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের মোবারক আলীর স্ত্রী। বিয়ের পর থেকে সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। তাই অভাবের সংসারে তিনি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে ২০২২ সালে হাঁসের খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকে হাঁসের সংখ্যা।
পাশাপাশি বাড়িতে মিনি হ্যাচারি স্থাপন করে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করছেন সোনিয়া খাতুন। তার হ্যাচারির নাম দিয়েছেন ‘মেসার্স সোনিয়া হ্যাচারি’। এ হ্যাচারি থেকে উৎপাদিত বাচ্চা সরবরাহ করছেন সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায়। শুধু ডিম আর বাচ্চা বিক্রি করেই তিনি মাসে আয় করছেন ৩০-৪০ হাজার টাকা। পরিবারের অভাব অনটন ঘুচিয়ে তিনি এখন স্বাবলম্বী।
খামারি সোনিয়া খাতুন বলেন, আমার আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। এজন্য ৩০টি হাঁস কিনে পালন শুরু করি। শতাধিক হাঁস প্রতিদিন ডিম দেয়। সেই ডিম তিনদিন পরপর বিক্রি করি। এছাড়া স্থানীয় এনজিও’র সহায়তায় বাসায় একটি মিনি হ্যাচারি স্থাপন করেছি। আমার খামারে উৎপাদিত ডিম থেকেই এ হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। যা বিভিন্ন এলাকার মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খামারে আমার খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকা। আর এসব হাঁস বিক্রি করলে প্রায় ৮ লাখ টাকা দাম পাওয়া যাবে। এখন প্রতি মাসে ডিম-বাচ্চা বিক্রি করে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।
আমিনা আক্তার নামের তার এক প্রতিবেশী জানান, সোনিয়া খাতুনের খামার দেখে খুব ভালো লাগছে। আমারও ইচ্ছা আছে এরকম খামার করার।
সোলেমান হোসেন নামে আরেকজন জানান, একজন নারী হয়ে তিনি এতোটা সফল হয়েছেন। আমরাও যদি কোনো সহযোগিতা পাই তাহলে হাঁসের খামার করবো।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ অলিউল ইসলাম বলেন, সোনিয়া খাতুন একজন সফল খামারি। আমরা তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এছাড়া যারা এরকম খামার করছেন তাদের জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।