ডেস্ক রিপোর্ট: মহামারি করোনাভাইরাসের ধকল কাটিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে তেলের বাজার। দফায় দফায় দাম বেড়ে বিশ্ববাজারে প্রায় দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে তেলের দাম। বিশ্বাবাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে গত বছরের নভেম্বর থেকেই। তবে গত এক সপ্তাহে সাম্প্রতিকালের মধ্যে তেলের দামে সব থেকে বড় উত্থান হয়েছে। এতে ২০১৯ সালের এপ্রিলের পর তেলের দাম সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে।
গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে সাড়ে সাত শতাংশের ওপরে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় আট শতাংশ। আর হান্টিং অয়েলের দাম বেড়েছে সাড়ে পাঁচ শতাংশের ওপরে।
রেকর্ড এই দরপতনের পরেই অবশ্যই তেলের দাম বাড়তে থাকে। এতে রেকর্ড দরপতনের ধকল সামলে গত বছরের বেশিরভাগ সময় প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৪০ ডলারে আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়া এবং লিবিয়ার তেল উত্তোলন বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঝে বিশ্ববাজারে তেলের দামে বড় দরপতন হয়। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অপরিশোধিত ও ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়।
তবে এই পতনের ধকল কাটিয়ে গত নভেম্বর থেকে আবার তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। অবশ্য প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৫০ ডলারের নিচে থেকেই ২০২০ সাল শেষ হয়। নতুন বছরের শুরুতেও তেলের দামের এই বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যায়। কয়েক দফা দাম বেড়ে করোনার মধ্যে প্রথমবার ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলারে উঠে আসে। এর মাধ্যমে মহামারি শুরু হওয়ার আগের দামে ফিরে যায় তেল।
অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। শেষ কার্যদিবসের ২ দশমিক ৭৯ ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৬৯ দশমিক ৫৩ ডলারে উঠে এসেছে। এতে গত এক সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।
অপরদিকে গত এক সপ্তাহে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে প্রতি গ্যালন হান্টিং অয়েলের দাম ১ দশমিক ৯৫ ডলারে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে মাসের ব্যবধানে হান্টিং অয়েলের দাম ১১ দশমকি ৪৫ শতাংশ বেড়েছে।
তেলবাজার বিষয়ক সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংস্থা ভ্যান্ডা ইনসাইটসের প্রতিষ্ঠাতা বন্দনা হরি সম্প্রতি বলেন, ‘তেলের মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বড় চালক হলো- করোনাভাইরাস পিছু হটছে, এমন ইঙ্গিতের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক ও তেলের চাহিদা পুনরুদ্ধার প্রত্যাশার শক্তিশালী উত্থান। এর পেছনে অন্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে উৎপাদক দেশগুলো, বিশেষ করে সৌদি আরবের তেল সরবরাহ কমিয়ে দেয়া।’