তাজাম্মূল হুসাইন, মণিরামপুর থেকে:
যশোরের মণিরামপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীন গভীর নলকূপ স্থাপনে জনগণের কাছ থেকে উত্তোলনকৃত অর্থ (সহায়ক চাঁদা) পকেটবন্দি করেছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টুর বিরুদ্ধে এ সহায়ক চাঁদা অফিসে জমা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা জমা না দেয়ায় ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে বিপাকে পড়েছে সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষ।
বার বার তাগাদা দেয়া হলেও গত এক বছর ধরে টাকা জমা দেয়া নিয়ে টালবাহানা করে চলেছেন তিনি। সর্বশেষ ইউপি চেয়ারম্যানকে টাকা পরিশোধে গত ১৭ নভেম্বর ৩ কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দিয়ে চূড়ান্ত নোটিশ প্রদান করা হলেও তাতে সাড়া মেলেনি। ফলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানাগেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে উপজেলায় ৫শ’৯৭টি গভীর নলকূপ স্থাপনের বরাদ্দ আসে। সে মোতাবেক উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন ৫০টি গভীর নলকূপের বরাদ্দ পায়। নিয়মানুযায়ী প্রতিটি নলকূপের অনুকূলে ৭ হাজার টাকা (সহায়ক চাঁদা) জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে জমা দেয়ার কথা। যা গ্রাহকের কাছ থেকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ আদায় করেছে। এ হিসেবে ওই অফিসে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়ার কথা থাকলেও নলকূপ স্থাপনের শুরুতেই ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দেন। বাকী টাকা কয়েকদিন পরে জমা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও টাকা জমা না দেয়ায় নলকূপ স্থাপনের কাজ বন্ধ করে দেয় অফিস। পরে ইউপি চেয়ারম্যান বাকি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার চেক সোনালী ব্যাংক, রাজগঞ্জ শাখার অনুকূলে পরিশোধ করেন। যার চেক নং-গথ/১০ নং-০৪০১৪১৫। কিন্তু টাকা সংগ্রহ করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই চেকের অনুকূলে টাকা নেই বলে জানিয়ে দেন। বিষয়টি অফিস কর্তৃপক্ষ ইউপি চেয়ারমানকে অবগত করলে তিনি এলজিইডি অফিসের পাওনা বিল উত্তোলন করে পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওই বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। এভাবে টাকা জমা নিয়ে চেয়ারম্যান গত ১ বছর ধরে টালবাহানা করে চলেছেন বলে অভিযোগ।
টাকা পরিশোধে ৩ কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দিয়ে গত ১৭ নভেম্বর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ প্রদান করা হয় ইউপি চেয়ারম্যানকে। যার স্মারক নং-৪৬.০৩.৪১৬১.৩০১.১৬.৩৩.১৫-১৯৬।
উপজেলা সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জয়দেব কুমার দত্ত জানান, চেয়ারম্যান যা করছেন তা সরকারি কাজ বাস্তবায়নে বাঁধা দেয়ার শামিল। শিঘ্রই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টু নোটিশ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আগামী মঙ্গলবার টাকা জমা দেয়া হবে।