আমজাদ হোসেন মন্টু, নলডাঙ্গা থেকে
স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায় মোঃ রহিদুল ইসলাম (৪৫) নামে এক গ্রাম্য ডাক্তার খুন করা হয়েছেন। গত রোববার রাত ১০টার সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার সময় তার স্ত্রীর সাবেক স্বামী মহাসিন আলী বুট্টোর ফালার আঘাতে মারাত্মক জখম হন রহিদুল ইসলাম। তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় লোকজন। সেখানে টানা ছয় দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রাত ১০ টার সময় মারা যান তিনি। নিহত রহিদুল ইসলাম উপজেলার ক্ষুদ্র বাড়িয়াহাটি গ্রামের আবুল কাশেম মণ্ডলের ছেলে। তিনি গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ছিলেন ।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নলডাঙ্গা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আকরাম আলী ওরফে মাকেরের ছেলে মহাসিন আলী ভুট্টোর স্ত্রী দুই সন্তানের জননী জোসনা বেগম একই উপজেলার ক্ষুদ্র বাড়িয়াহাটি গ্রামের গ্রাম্য ডাক্তার রহিদুল ইসলামের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন । পরবর্তীতে স্বামী মহসিন আলী ভুট্টোর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন জোসনা বেগম। একইসঙ্গে গত ৬ মাস আগে গ্রাম্য ডাক্তার রহিদুল ইসলামকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। এই অবস্থায় সাবেক স্বামী মহসীন আলী ভুট্টো বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে মীমাংসার মধ্য দিয়ে পুনরায় সাবেক স্বামী মহাসিন আলী ভুট্টোর কাছে ফিরে যান জোসনা বেগম। কিছুদিন পর ফের স্বামী মহসীন আলীকে তালাক দিয়ে আবারও গ্রাম্য ডাক্তার রহিদুল ইসলামকে বিয়ে করেন জোসনা বেগম। এ নিয়ে রহিদুল ইসলাম ও মহসিন আলী ভুট্টোর মধ্যে শুরু হয় চরম দ্বন্দ্ব। ওই ঘটনার জের ধরে গত ২৭ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত ৯ টার সময় গ্রাম্য ডাক্তার রহিদুল ইসলাম স্থানীয় পীরগাছা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মহসিন আলী ভুট্টো তার পথরোধ করে ফালা দিয়ে আঘাত করেন। এতে মারাত্মক জখম হন রহিদুল ইসলাম। এসময় স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তাৎক্ষণিভাবে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রাত দশটার সময় তার মৃত্যু হয়। ওসি বলেন, ঘটনার পর থেকেই মহসিন আলী ভুট্টো পলাতক রয়েছেন। তবে এখনো থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। নিহতের মরদেহের ময়না তদন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওসি আরো বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।