বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১১:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সালথায় জমি দখল করে ছাপরা ঘর নির্মানের অভিযোগ  লালমোহন পৌরসভা ওয়ার্ড বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও মতবিনিময় সভা শ্রীপুরে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প, চিকিৎসাপত্র, ঔষধ ও চশমা বিতরন কাপ্তাইয়ে আহত ফারুক খানকে দেখতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ধর্ম বিষয় সম্পাদক নাজিরপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কালে তিনজনকে ৬ মাসের জেল ভৈরবে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে চালকের মৃত্যু সিরাজগঞ্জের চৌহালীউপজেলায় খামারীকে হত্যা করে ৪ গরু লুট বীরগঞ্জে কর্মসংস্থান ব্যাংকের ২৭৮ তম শাখা শুভ উদ্বোধন নবীনগরে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেত শিল্প নান্দাইলে আইন শৃঙ্খলার উন্নয়নে জেলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেলেন মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন যুব সমাজকে কারিগরি শিক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান: উপদেষ্টা সাখাওয়াত লালমোহনে এসএসসি সমমান পরীক্ষার দায়িত্বরত অফিসারদের মেজর হাফিজের পক্ষে সম্মননা প্রদান খানাখন্দে ভরা রাস্তা, সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন বাংলাদেশে ইন্টেলিজেন্ট এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম নিয়ে এলো হুয়াওয়ে ঢাকায় রাশিয়ান হাউসে আন্তর্জাতিক ম্যারাথন ‘ওয়ান রান’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত সিরাজগঞ্জে অনুর্ধ্ব ১৪ বালক-বালিকাদের অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতার প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ বিছানায় পড়ে আছে গৃহবধূর মরদেহ, পাশ থেকে ভেসে আসছে শিশু সন্তানের কান্না রিচমাইন্ড প্রোপার্টিস লিঃ এ-র আয়োজনে গাজীপুরে মৌসুমী ফল উৎসব অনুষ্ঠিত স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন কমিশনের সামনে এনসিপির বিক্ষোভ ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল? উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের টাকার নতুন নোটে ছবি থাকছে যাদের এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণের সময়সূচি প্রকাশ দিনাজপুরে মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির আক্রমণে দুজনের মৃত্যু কুষ্টিয়ায় মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ১১ শার্শায় ১০ টাকার লোভ দেখিয়ে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ কিশোরগঞ্জে কলেজছাত্র হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা পাকিস্তানের

পলকেই পিছু স্মৃতির হাতছানি : নুসরাত মারিয়ম

নুসরাত মারিয়ম
শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ৫:০৩ অপরাহ্ন

সেই দিনটা ছিলো ফাগুনের পরশ মাখানো মিষ্টি বাতাসে ছুয়েছিলো অবয়ব মন। বসন্তের ফুলের সুভাষে জগত সংসার ভেসেছিলো আসমান-জমিন। এমন কি অতল সমূদ্র! আহা ঘ্রাণ! ফাগুনের আগুন ঝরা রক্তিম ফুলে কৃষ্ণচূড়ায় কল-কাকলীর তান। এ যেন প্রশান্তময় এক অরোরা ভোর।

শরীর পোড়ানো নয় এ রোদ..
স্নিগ্ধ কোমল পরশে খিলখিলিয়ে উঠলো ধরাধাম। ছুটছিলো খলবল করে ঝরণার আকুল করা লয় তান, নদ-নদী পার হয়ে সমূদ্র মোহনায় চললো, আর ধরলো সুখানন্দের গান।

হঠাৎ অমি তার আদুরে একমাত্র পুত্রের স্কুলের ব্যাগটা নিয়ে বাসায় ঢুকতে না ঢুকতেই কাচ ঘেরা জানালা হতে দৃষ্টির সীমানায় উঁকিঝুঁকি দিলো বিশালতায় ভরপুর গগনে। নীল-আসমানে চোখ রাখার জন্য অমি ব্যাগটা হাতে নিয়ে এগিয়ে জানালার কাছে চললো। ব্যাগের সাথে জানালায় ঝুলানো ডোর বেলের টুং টাং আওয়াজে অমি আনমনে হারিয়ে গেলো দূর অজানায়।

অপলক দৃষ্টিতে নীলাভার পথে চলছে শ্বেত-শুভ্র মেঘের ভেলার দ্বিগবিদিক ছুঁটাছুঁটি। আহ্ নৈসর্গিক সৌন্দর্য অবলোকনে অমি ভেসে গেলো ছেলেবেলার স্বর্ণালী ছোঁয়ায় ভরপুর স্কুল বারান্দায় সেই মাহেন্দ্রক্ষণে!

একের পর এক স্মৃতি পাতার ঝাপি চললো খুলে করোটির কোটরে । টুং টুং ঘন্টার আওয়াজ অমি কে মুহূর্তেই নিয়ে গেলো তার স্কুলের বারান্দায় ঝুলানো পিতলের ঘন্টার কাছে।

“আহ্ কি মধুময় ক্ষণ
আনন্দ উল্লাসে মাতোয়ারা
সদাই বন্ধু প্রিয়জন”

এই তো সেইদিন স্কুল ব্যাগ কাঁধে করে স্কুল যাওয়ার কথা। অমি ছিলো অনেক ডানপিটে আর ভীষণ দুরন্ত চঞ্চল স্বভাবের এক আদুগাদু মেয়ে। বাসায় তার মত শান্ত ভদ্র ইহজগতে দ্বিতীয় কোন শিশু ছিলো কিনা সন্দেহ! মা বড় হয়ে অমি’র কান্ডকারখানা দেখে বিস্মিত হতো প্রায়শ-ই। তুই তো আমার অতি শান্ত একটি আদুরে মেয়ে। এত দুষ্ট হলে কবে হতে? যখন অমি অনার্স ফাইনাল ইয়ার পড়তো তখন তিনি এই প্রশ্ন ছুঁড়তেন।

স্কুলে গিয়ে বেঞ্চে ব্যাগ রেখেই ভোঁদৌড় খেলার মাঠে। স্কুলে গেটে প্রবেশের পূর্বেই প্লান করে ফেলতো স্কুলে মাঠে আজ কোন কোন বান্ধবীদের সাথে সি-বুড়ি, দাড়িয়াবান্ধা খেলবে। তাই সে বাসা হতে একটু আগেই বের হয়ে যেতো স্কুলের পথে। মা তার চাকুরীজীবি। সকাল ৮ টার মধ্যে বের হয়ে যেতো বাসা হতে অন্য উপজেলায় ছিলো তার অফিস।

মাঠের মেইন জায়গাটা সব সময় অমি ও তার দলবল এর ছিলো সি-বুড়ি, দাড়িয়াবান্ধা খেলার জন্য বরাদ্ধ । ঐ জায়গা দখল করার মত সেই স্কুলের কোন ছাত্রীদের সাহস ছিলো না। অমি যেদিন স্কুল off যেতো অসুস্থতায়। তখন অন্যরা হাফ ছেড়ে বাঁচতো ঐ জায়গা খেলার সুযোগ মেলাতে।

ক্লাস শুরু হলেই শুরু হতো সময় গুনন, কখন ৩:১৫ মিঃ ঢং ঢং ঘন্টা বেজে উঠবে টিফিনের জন্য। আর অমনি টিফিন টাইমে অমি ও তার বান্ধবীরা মিলে বেঞ্চে বসে বসে মনের মত কন্ঠ ছেড়ে গান গাওয়া।

ছেলেবেলা মনে হতো কখন বড় হবো? পড়াশুনা শেষে চাকুরী করবো? স্বাধীন মত ঘুরবো? আর আজ গানের লাইনা ভিতর দিয়ে বেজে উঠে…..
মনে পড়ে যায় বন্ধুদের আড্ডা মুখর প্রহর তুমুল উল্লাসে ভরা প্রিয় শহর!!!! কে? কোথায়?কেমন আছে অনেকের কথাই জানে না। হয়তো ব্যস্ত সবাই তার জগত সংসার নিয়ে। হয়তো মেলে না সময় তবুও সেইক্ষণ ফিরে পেতে চায় ফেরারি এ হৃদয়……..

উহ্! কি আশ্চর্য এই ভবের জগত। এটা নেই, ওটা চাই। ওটা পেলে এটা চাই! ইচ্ছে হয় সেই ছেলেবেলা স্কুল জীবন ফিরে পেতে…হইচই করে বান্ধবীদের সাথে ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু সেই ফুসরত কোথায়? বন্ধু-বান্ধব বিহীন এই একাকী জীবন ভালো লাগে না তার…..

কি করবে? ভাবতে না ভাবতেই অকস্মাৎ ছেলে দৌঁড়ে এসে হাতটা ধরে বললো, আম্মু তুমি কই হারায়ে গেলে? ছেলের কথায় সম্বিৎ ফিরে পেলো অমি, ছেলের দিকে তাকায়ে ভাবলো আসলেই ক্ষণিকের তরে কোথায় হারায়ে গেলাম এই আমি! আহা রে জনম, সহস্র বছর বড্ড সাধনায় প্রাপ্তি এ জনম।

এই জীবন আসলেই তার আর ভালো লাগে না। অমি ফিরে পেতে চায় বন্ধুদের আড্ডার হিরন্ময়ক্ষণ গুলো। ঢাকা শহরে অবয়ব পড়ে থাকলেও, ছেলেবেলায় বড় হওয়া ঐ প্রিয় শহরে পড়ে থাকে, থাকে পড়ে তার মনপ্রাণ।

আজ সময়ের ব্যবধানে যার যার জায়গাতে ওরা সবাই এতটাই ব্যস্ত যে, কারো সময় হয় না মুঠো ফোনে কথা পর্যন্ত বলার, নতুবা ইচ্ছে শক্তিটা মরে গিয়েছে নিজ সংসারে পদার্পণ এর সাথে সাথে।

আনন্দ উল্লাস আসলে এভাবে-ই কি হারিয়ে যায়? সময়ের ফাঁকে ফাঁকে চোরাবালি এ জনমের বাঁকে বাঁকে!

লেখক :
ব্যবসায়ী, প্রাক্তন আইন শিক্ষার্থী সেন্ট্রাল ল’ কলেজ, ঢাকা।


এই বিভাগের আরো খবর