মেহেদী হাসান, শরনখোলা থেকে : বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলায় আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের প্রচারণার নামে (শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপনের) গাছে ঠুকছে পেরেক। উপজেলাজুড়ে বিভিন্ন সড়কের পাশে অবস্থিত ছোট-বড় গাছগুলোর অধিকাংশই রেহাই পায়নি বিজ্ঞাপনের পেরেকের নিষ্ঠুর আঘাত থেকে। রাজনৈতিক নেতাদের শুভেচ্ছা বার্তার নানা রংয়ের ফেস্টুন-ব্যানারের পাশাপাশি কোচিং সেন্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসকরাও পিছিয়ে নেই এই প্রতিযোগীতা থেকে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যে যেখানে পারছেন পেরেক ও তাঁর কাঁটা ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে বিজ্ঞাপনের ফেস্টুনগুলো সাটিয়ে দিচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধানসাগর, খোন্তাকাটা, রায়েন্দা ও সাউথখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলা প্রসাশন এলাকা, পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল রোড, এবং শরনখোলা-মোরেলগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের অধিকাংশ গাছে লাগানো হয়েছে বিজ্ঞাপন ও শুভেচ্ছা বার্তা। লোহার পেরেকের সাহায্যে গাছের সঙ্গে এমন ভাবে গেঁথে দেওয়া হয়েছে যাতে সহজে কেউ খুলতে না পারে। এক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে রাস্তার ধারের গাছগুলো। বিজ্ঞাপনের পেরেক ঠুকে দেওয়ার কারণে গাছে জল জমে তাতে পচন ধরায় বহু গাছ মারা যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ২০১২ সালে দেয়াল লিখন ও পোস্টার সাটানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন পাস করেন। তাতে বলা হয় নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য কোনো স্থানে দেয়াল লিখন বা পোস্টার লাগানো যাবে না। তবে এসব দেখার কেউ নেই। তা ছাড়া যেভাবে পেরেক দিয়ে এসব বিজ্ঞাপনসহ শুভেচ্ছার বাণী লাগানো হচ্ছে, তাতে সামান্য ঝড় বাতাসে এগুলো ছিঁড়ে পথচারীদের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এ ব্যপারে জানতে চাইলে শরনখোলা উপজেলা জাতীয় পার্টি নেতা অ্যাডভোকেট শহীদুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক বিধি-বিধান না জেনেই বর্তমানে অনেকে দল করে। যার ফলে নিয়ম-নীতি লংঙ্গনের ছড়াছড়ি চলছে। তবে সরকারি আইন যারা অমান্য করছে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিতে পারেন। অপরদিকে উপজেলার ধান সাগর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও শুভেচ্ছাদানকারী যুবলীগ নেতা শামীম মুন্সী এবং সাউথখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম লিটন বলেন, পরিচিতি বৃদ্ধির জন্য কিছু শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও আমরা কোনো গাছে পেরেক দেইনি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অঞ্জন সরকার বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে যারা যুক্ত হতে চান তপশীল ঘোষণা হলে আচরণ বিধির সব নিয়ম কানুন আমরা তাদের বুঝিয়ে দেই। তবে রাজনৈতিক নেতা ছাড়া ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার এখতিয়ার তার নেই।
দেশ–বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন।