অনলাইন ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার ঘটনায় করা মামলার সাক্ষী কমোডর (অব.) গোলাম রব্বানী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি আবু নাসের চৌধুরীকে জামিন দেননি আপিল বিভাগ।
ওই আসামিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি চিকিৎসা শেষে তাকে আবার কারাগারে ফেরত নিতেও আদেশে বলা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।
অন্যদিকে আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রোসেসিং জোনের (কেইপিজেড) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রব্বানী।
পরে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর তার মৃত্যু হয়। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেল হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নৌবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং নৌ-পরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকও ছিলেন।
হামলার ঘটনার পর কেইপিজেডের সাবেক প্রকৌশলী একেএম এমতাজুল ইসলাম চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগে একটি মামলা করেন।
তবে গোলাম রব্বানীর মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
ওই মামলায় ২০০৫ সালে আসামি মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আব্দুল মালেক সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া রায়ে অপর দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড এবং সাইফুল ইসলামকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে ওই রায়ের পর দণ্ডিতরা হাইকোর্টে আপিল করেন। আবার সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষও আপিল করে।
হাইকোর্টে শুনানি শেষে আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীর সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ছাড়া মোহাম্মদ সেলিমের আপিল খারিজ করে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল এবং আবদুল মালেক সোহেলের আপিল গ্রহণ করে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
এদিকে বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া সাইফুল ইসলামের বিষয়টি পুনরায় শুনানি নিয়ে রায়ের জন্য বিচারিক আদালতে পাঠান হাইকোর্ট।
এরই ধারাবাহিকতায় আবু নাসের চৌধুরীর পৃথক জামিন আবেদন মঙ্গলবার নাকচ করেন আপিল বিভাগ।
সূত্র : সমকাল