ইমরুল হাসান বাবু, টাঙ্গাইল থেকে
টাঙ্গাইলে চলতি বন্যায় রোপা আমনসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে জানিয়েছে, টাঙ্গাইলের চলতি মৌসুমে আমনের চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। জেলায় ৯৮০ হেক্টর জমির আমন নিমজ্জিত হলেও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৮৯ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেখানে ৯১ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যায় ১১শ হেক্টর জমির রোপা আমন নিমজ্জিত হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ১৫৫ হেক্টর, কালিহাতীতে ২০৫ হেক্টর, নাগরপুরে ৮০ হেক্টর, মির্জাপুরে ১৪০ হেক্টর, ভূঞাপুরে ১৩০ হেক্টর, গোপালপুরে ১২৫ হেক্টর, সখীপুরে ৪০ হেক্টর ও দেলদুয়ারে ১০৫ হেক্টর, কালিহাতী ১২০ হেক্টর। সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের কৃষক শফিকজুল ইসলাম শফি, মো. খোরশেদ আলম খসরু, দারোগ আলী, কাকুয়া গ্রামের কৃষক নুরুল, মির্জাপুর উপজেলার কৃষক আনছের আলী, বাসাইল উপজেলার কৃষক গিয়াস উদ্দিন, নাগরপুর উপজেলার শমসের উদ্দিন, ভূঞাপুর উপজেলার পলসিয়া এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক, কালিহাতী উপজেলার কৃষক শাজাহান, সখিপুর উপজেলার আজগর আলী, দেলদুয়ার উপজেলার কৃষক শরবেস আলী জানান, দেশে যে সময় বন্যা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে সময় হয়নি। এ জন্য আমরা আমন ধানের চারা রোপণ করি। অসময় বন্যা হওয়ায় আমাদের রোপণকৃত আমন ধান বন্যার জলে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন এই অসময়ে বন্যা হয়ে আমাদের জায়গা-জমির উপর রোপা আমন এবং সবজি নষ্ট হয়েছে। করটিয়া ইউনিয়নের মাদারজানী গ্রামের কৃষক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, অসময়ের বন্যার কারণে আমার অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সরকারিভাবে আমাদের যদি প্রনোদনা দিত, তাহলে পরের আবাদ ইরি ধান লাগাতে পারতাম। সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নের হুগড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আওয়াল, ওয়ারেছ, আব্দুর মালেক, সাজান ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের জমির উপর মাশকলাই, রোপা আমন ও সবজির বাগানসহ সেটি জলে নিমজ্জিত হয়েছে। সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকের এই ফসলে খরচ কম হয়। তাই এই ফসল তুলে সেই খরচে পরবর্তী ইরি ধান রোপণ করি। কিন্তু এবারে ইরি ধান রোপণ করা কষ্ট হবে। আমাদের ক্ষতি পুশিয়ে উঠার জন্য সরকারের কাছে প্রণোদনার দাবি করছি। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার জানান, চলতি বন্যার জল নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে নাভি জাতের আমন রোপণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রণোদনার পাশাপাশি আগাম রবিশষ্য চাষে সহায়তা দিয়ে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন তারা। এমন আভাস দিয়েছেন তিনি।