জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, গাজা একটি ‘বর্জ্যভূমি’তে পরিণত হয়েছে যা এখন প্রায় ‘বসবাসের অযোগ্য’ হয়ে উঠেছে। বুধবার বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে লাজারিনি বলেন, গাজায় আবার দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। সেখানে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।
লাজারিনির বরাত দিয়ে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ একটি সত্যিকারের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে প্রবেশ করছি যেখানে দুর্ভাগ্যবশত আবারও দুর্ভিক্ষ বা তীব্র অপুষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আসন্ন শীত এবং গাজার সাধারণ মানুষের দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা সব মিলে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ত্রাণ বিতরণের বিষয় উল্লেখ করে লাজারিনি বলেন, গত দুই থেকে তিন সপ্তাহে গতকাল ছাড়া গাজার উত্তরে কোনো ত্রাণ প্রবেশ করেনি। যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে গাজার খাদ্য সংকট এড়ানো যেতে পারে। যা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে অবরোধ করে রেখেছে এবং ক্রমাগত বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে।
এদিকে ৩০ দিনের মধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ বাড়াতে ইসরায়েলকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়া না হলে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সামরিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
এটি ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সবচেয়ে কঠোর লিখিত সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসরায়েল গত এক মাসে উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ মানবিক চলাচল বন্ধ বা সীমাবদ্ধ করেছে।
উত্তর গাজায় ইসরায়েলের চালানো আক্রমণের ফলে দক্ষিণ গাজায় বেসামরিক মানুষ ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যেই এমন চিঠি পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পর ইসরায়েল তা পর্যালোচনা করছে।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আমাদের দেশ এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখে। যুক্তরাষ্ট্র যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে তার সমাধানও করতে চায় তারা। ইসরায়েল অবশ্য এর আগে দাবি করেছে যে, তাদের মূল লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা। তারা কোথাও মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে বাঁধা দিচ্ছে না।