কারখানা বা ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বর না থাকলেও ৪২৯টি গার্মেন্টস কারখানা সরকারের নানা সুবিধা নিচ্ছে। মুলত: তৈরী পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনকে সামনে রেখে ওই গার্মেন্টস কারখানাগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে। নির্বাচনে একটি পক্ষ ওই কারখানাগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
ইতিমধ্যে ৬৭টি কারখানার নাম ওই নির্বাচনের ভোটর তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে নির্বাচনী আপীল বোর্ড। তবে বাকী কারখানাগুলোর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন দিয়েছে একটি পক্ষ।
এফবিসিসিআই আরবিট্রশেন ট্রাইব্যুনালে গত ৩১ জানুয়ারি ভূয়া ভোটারের বিষয়ে আবেদন দেয়া হলেও এখনো পর্যন্ত তা শুনানির জন্য আসেনি।
এ বিষয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের মহাসচিব বরাবর একটি তাগাদাপত্র দেয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ দেয়ার আটদিনের মাথায়ও এ বিষয়ে কোন শুনানী হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা আদৌ নেয়া হবে কিনা সে বিষয়েও অভিযোগকারীকে কিছু জানানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ দেয়ার সাতদিনের মাথায় এ বিষয়ে শুনানী হবার কথা। আরবিট্রশেন ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি দেশের বাইরে আছেন।
বিষয়টি নিয়ে কি করা যায় তা পর্যালোচনা করতে ট্রাইবুনাল সচিবালয়কে দেখতে বলা হয়েছে।
তৈরী পোশাক রপ্তানিকারকদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তাঁরা জানান, নামসর্বস্ব এসব কারখানা মালিকের কারনে পুরো খাতের বদনাম হচ্ছে।
তারা ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে নানা ধরনের জাল জালিয়াতিতে জড়িত হয়ে পড়েন। অনেক সময় বিজিএমইএ এসব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইউজার্স ডিক্লারেশনের কাগজপত্রসহ নানা ডুকুমেন্ট সরবরাহ করে।
বিভিন্ন জায়গায় এসব কারখানা মালিক বিজিএমইএর সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে নানা সুবিধা ভোগ করে।
আগামী ৯মার্চ তৈরী পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচন হবার কথা। নির্বাচনের তফশিল অনুযায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা তৈরী হরা হয়। সে তালিকায় থাকা কয়েকজনের বিষয়ে সন্দেহ হলে ঘটনা সবার সামনে আসে। এর আগে ৪২৯টি প্রতিষ্ঠানের নামে টিআইএন আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া একটি পক্ষ।
তাদের অভিযোগ, সদ্য প্রকাশিত প্রাথমিক ভোটার তালিকায় থাকা ৪২৯ জনের কর প্রদানের তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি সংগঠনের নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর ওই ভোটারদের নাম ও করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সম্বলিত একটি তালিকাসহ আপত্তিপত্র দেওয়া হয়।
নির্বাচন আপিল বোর্ডে দেওয়া এক আপত্তিপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জানুয়ারি প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচনী বোর্ড। এ তালিকায় থাকা ভোটারদের তথ্য এনবিআরের ওয়েবসাইটের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে (তল্লাশি) দেখেছেন আপত্তিদাতা। এতে দেখা যায়, ভোটার তালিকায় ৪২৯ জন এমন ভোটার রয়েছেন, যাদের আয়কর প্রদান সংক্রান্ত তথ্য ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি।