ফয়জুল ইসলাম ফয়সাল, মুরাদনগর থেকে:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মাসুদুর রহমান নামে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে ১৭ পরিবারকে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই পরিবারগুলোর ভাষ্য, মিথ্যা মামলা, জাল দলিল, অপহরণসহ নানা ভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাদের আতংকে রেখেছেন মাসুদ। সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা প্রেসক্লাবে এসে সংবাদকর্মীদের কাছে প্রতারক মাসুদুর রহমান কর্তৃক বিভিন্ন ভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরেন। এতে বেরিয়ে আসছে তার নানা অপকর্মের ফিরিস্তি। ভুক্তভোগীদের আকুতি তারা রেহাই চান প্রতারক মাসুদের হয়রানি থেকে। অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান (৪৩) উপজেলার ৯নং কামাল্লা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল করিম ওরফে কনু মিয়ার ছেলে। নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত দুধ মিয়া ব্যাপারীর ছেলে ভুক্তভোগী কামাল উদ্দিন বলেন, মাসুদ জাল জালিয়াতিতে এক নম্বর। সে কামারচর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৪৩২৭ দাগের ৫ শতক জায়গাকে ১৫ শতক বানিয়ে এবং ৪৩২৬ দাগের ১৮ শতকের মধ্যে ৯ শতক সম্পত্তির মালিক কাদির ও বাকী ৯ শতকের মালিক জুয়েলসহ ৪ জন। এই ১৮ শতক সম্পত্তি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তার স্ত্রী সারমিন আক্তার সুমিকে লিখে দেন (যার দলিল নং ১৫৪২, তারিখ ২২/২/২০১৬)। সে আরও একটি ভুয়া দলিল সৃজন করে ৪৩৪৩ দাগ থেকে ৩৩ শতক সম্পত্তি দাবি করে (দলিল নং ৯২৪, তারিখ : ১০/০২/৬৬)। অথচ ওই দলিলের বলিয়ম যাচাই করে দেখা যায় মূল মালিক আছানপুর গ্রামের আফাজ উদ্দিনসহ ৪ জন। উল্টো মাসুদ তার স্ত্রী সারমিন আক্তার সুমিকে বাদী বানিয়ে আমাকেসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে এল.এস.টি (যার নং ৯৮৭/১৯) মামলা দিয়ে অহেতুক হয়রানি করছে।
অপরদিকে মাসুদুর রহমান চিকিৎসার নামে নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত বাতেন সরকারের ছেলে আলা উদ্দিনকে (৪৫) অপহরণ করে নেয়। পরে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায়। অপহরণের শিকার আলা উদ্দিন বলেন, সরলতার সুযোগ নিয়ে ঢাকা শহরে ভালো ডাক্তার দেখানোর নাম করে চন্দনাইল নিয়ে আমাকে আটকে রেখে পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা চায়। পরে স্থানীয় মাতাব্বর হানিফ মিয়ার মধ্যস্থতায় ২ লাখ টাকা পরিশোধ করে আমাকে ছাড়িয়ে আনে।
নোয়াগাঁও গ্রামের মাতাব্বর হানিফ মিয়া বলেন, এলাকার লোক এখন তাকে মাসুদ নামে চেনে না, চেনে জালিয়াতির হেড মাস্টার হিসাবে। হেন কোনো কাজ নেই, মাসুদ করে না। জালিয়াতি, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, অবৈধ ড্রেজার ও জাল টাকার ব্যবসা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মাসুদ জড়িত। তার বেশ-পোষাক আর কাজে কোনো মিল নেই। একাধিক মামলার আসামি হয়ে কিভাবে এই অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে আমার মাথায় ধরে না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাসুদুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কথা শেষ না করেই ওই প্রান্ত থেকে লাইন কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
