ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ শাখার নৈশপ্রহরীকে খুন করে ব্যাংক লুটের চেষ্টার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে আশুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে আশুগঞ্জ উপজেলার বগৈর গ্রামের রসু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন (২৪), আড়াইসিধা গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মো. জামিল (২৮) ও রহিম বাদশার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৭) এবং চরচারতলা গ্রামের মৃত মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মাসুম কবির (৩৮)। এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর সংলগ্ন বিডিবিএল শাখা ভবনের ভেতর থেকে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাসের (২৩) হাত-পা বাধা অবস্থায় রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার চান্দপুর গ্রামের ক্ষিরোদ বিশ্বাসের ছেলে। হত্যকাণ্ডের মূল হোতা জামাল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এসপি আনিসুর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা বড় কাজ করার জন্য ব্যাংক লুটের পরিকল্পনা করছিল। সেজন্য বিডিবিএল ও সোনালী ব্যাংক এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের আশুগঞ্জ শাখায় লুট করার জন্য খোঁজ-খবর নিতে থাকে। কিন্তু সোনালী ব্যাংকটি বাজারে হওয়ায় এবং সবসময় লোকজনের আনাগোনা থাকায় সেখানে লুটের পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়। প্রিমিয়ার ব্যাংকের চারদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকায় সেখানেও লুটের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় তাদের।
তিনি আরও বলেন, বিডিবিএল ব্যাংকের একটি জানালা অরক্ষিত এবং পেছন দিকে চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় তারা লুটের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী জামাল ও জামিল জানালার গ্রিল কাটে। মোস্তাক ও শাহাদাৎ নামে দুইজন রাস্তায় পাহারা দেয় এবং লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য করে। জামাল ও জামিল ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে নৈশপ্রহরী রাজেশকে লোহার র্যাঞ্জ ও শাবল দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে হত্যা করে। এরপর তারা ব্যবস্থাপকের কক্ষে গিয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং একটি ল্যাপটপ ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে টাকার ভল্ট ভেঙে রক্ষিত টাকা লুণ্ঠনের করার চেষ্টা করে। কিন্তু ভল্ট ভাঙতে না পারায় টাকা লুট করতে পারেনি। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ল্যাপটপ ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংকের ভল্টের খোয়া যাওয়া দুইটি চাবি উদ্ধার এবং অভিযুক্ত বাকি দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দফতর) আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আলাউদ্দিন চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান ও ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহাম্মদ এবং আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ মাহমুদ।
