ইসমাইল খন্দকার, সিরাজদিখান থেকে
এবারের বন্যা ও করোনায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় মৎস্য চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর মৎস্য চাষিরা অনেক আশা ও ধার-দেনা করে মাছের চাষ করলেও তাদের সেই আশা করোনাভাইরাস ও বন্যার পানি নিঃশেষ করে পথে বসিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ জল বৃদ্ধির কারণে চাষ করা মাছ বন্যায় ভেসে গেছে। তাই এ উপজেলায় অনেক চাষি দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর ৬৬৮টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ৪০৫ জন মৎস্যচাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের মোট আয়তন ২২৯.৮৭ হেক্টর। এতে ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া করোনার কারণে মাছের দাম কম থাকায় লোকসানে পড়েন ১৭ জন মৎস্যচাষী। এতে ১৪ লাখ ৩১ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। সর্বমোট এ উপজেলায় মৎস্য খাতে করোনা ও বন্যায় ১ কোটি ৩৫ লাখ ৮১ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ক্ষতি আরও অনেক বেশী বলে জানা গেছে।
উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের মো. আলী বলেন, করোনা ভাইরাসে কম দামে মাছ বিক্রি করে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এছাড়া বন্যায় আমার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় আমার ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাঙ্গামালিয়া গ্রামের মান্নান মাঝি বলেন, আমার প্রায় ৬টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি। সরকার যদি সহযোগিতা না করে আমরা শেষ হয়ে যাবো। বাসাইল ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামের মৎস্য চাষী মো. আব্বাস বলেন, ধার-দেনা করে মাছ চাষ করেছিলাম। বন্যার পানিতে সব মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোছা আক্তামুন লিন্নাছ বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে অনেক চাষী ন্যায্য দামে মাছ বিক্রি করতে পারেনি। এতে মৎস্যচাষীদের অনেক লোকসান হয়েছে। এছাড়া এবারের বন্যায় প্রায় ৬৬৮টি পুকুরের মাছ সব ভেসে গেছে। এর কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষীদের। আমরা করোনাভাইরাসে ক্ষতি ও বন্যায় তলিয়ে যাওয়া চাষীদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।