ঢাকাপ্রতিদিন অন্যান্য ডেস্ক : ২০২৪ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ‘বয়স্ক ব্যক্তি’র তকমা জেতা ভারতীয় যোগী সন্ন্যাসী ও যোগগুরু স্বামী ড. শিবানন্দ মারা গেছেন। গত শনিবার (৩ মে) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ১২৯ বছর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দ রোববার তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ড. শিবানন্দ ১৮৯৬ সালে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হরিতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। চার বছর বয়সে পরিবার তাকে নবদ্বীপের বিখ্যাত সন্ন্যাসী স্বামী ওঙ্কারানন্দের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ৬ বছর বয়সে বাড়ি ফিরে শুনতে পান তার প্রিয় দিদি না খেয়ে মারা গেছেন। বাড়ি ফেরার আট দিনের মাথায় মারা যান মা-বাবাও।
পরে ১৯০১ সালে পুনরায় তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপে চলে যান। শিবানন্দের শিষ্য সঞ্জয় সর্বজ্ঞের বরাতে এবিপি জানায়, সম্প্রতি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাত ৯টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। সোমবার তার শেষকৃত্য হওয়ার কথা।
জীবিত অবস্থায় সুস্থ জীবন ও দীর্ঘ আয়ুর রহস্য হিসেবে ড. শিবানন্দ গণমাধ্যমকে জানিয়ে গেছেন, নিয়মিত যোগব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসের কথা। ভাত, রুটি আর সিদ্ধ সবজি খেয়ে বেঁচে ছিলেন। নিয়মিত ডায়েটের পাশাপাশি তেল, চর্বি ও মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার, ফল-দুধ বর্জন করেন। দাবি করতেন, তার কোনো দুঃখ, কষ্ট, চিন্তা ও সমস্যা নেই। তিনি অর্থ কিংবা দান গ্রহণ করতেন না।রাত ৩টায় ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম করতেন।
শিবানন্দের জন্মস্থান হরিতলা গ্রামের বাসিন্দা ও হবিগঞ্জ অক্সব্রিজ কলেজের চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ বলেন, ‘তিনি ভারতে থাকলেও জন্মস্থানের টানে হরিতলায় আসতেন। তবে এখন তার পরিবারের কেউ এখানে নেই। তার সুশৃঙ্খল জীবনযাপন আমার পছন্দের ছিল।’
প্রসঙ্গত, জন্মতারিখ অনুযায়ী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোসের চেয়েও পাঁচ মাসের বড় ছিলেন ড. শিবানন্দ। অবাক করার বিষয় হলো তিনি তিন শতক দেখেছেন। ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’ লাভ করেন তিনি। নিজের বয়সের সার্টিফিকেটের প্রমাণ হিসেবে রয়েছে ভারতীয় পাসপোর্ট।
ঢাকাপ্রতিদিন/এআর