রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক ডা: মো. রাজু আহমেদ কর্তৃক ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও রাবি শিক্ষক সমিতির সদস্যের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া কন্যাকে যৌন নিপীড়ন এবং তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুতের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে চরিত্রহীনদের কোনো পরিচয় থাকে না, যৌন নিপীড়নকারী সামাজিক কীট, চরিত্রহীন ডা: রাজুর অব্যহতি চাই, অশালীন হাত গুড়িয়ে দাও, ডা: রাজুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, চরিত্রহীনের কালো হাত ভেঙে দাও ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রতিবাদী লেখনি হাতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা। এসম অভিযুক্তের যথাযথ শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, অভিযুক্ত ডাক্তার শুধু এই ঘটনা নয় বরং দীর্ঘদিন ধরে এমন কাজ করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত মহিলা শিক্ষকসহ, নারী কর্মকর্তা, কর্মচারী, নারী শিক্ষার্থীরা তার কাছে নিরাপদ নয়। ১৩ বছরের ছোট একটি মেয়েকে নারীতে পরিনত করে দিলো? দূর্বৃত্তের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন একজন ডাক্তার যিনি নারীর শরীরে স্পর্শ ছাড়া চিকিৎসা করাতে পারেন না, নিজেকে সংযত রাখতে পারেন না তার কাছে কোনো নারী নিরাপদ নয়। তার চিকিৎসার লাইসেন্স বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, আইন বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আলিম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির পরিচালক দিল সেতারা চুনি প্রমুখ।
মানববন্ধনে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, রাজু আহমেদ একই ধরনের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে ঘটাচ্ছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নারীদের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল। যে নিজেকে সংযত রাখতে পারেন না; তার শুধু চাকরি নয়, তার চিকিৎসার সনদ বাতিল করা দরকার। এ বিষয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোবাররা সিদ্দিকা বলেন, আমাদের একই দাবিতে বারবার রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। আমরা সহকর্মী, শিক্ষক ও নারী হিসেবে কোথাও নিরাপদ নই। এটি অত্যন্ত দুঃখের নাকি লজ্জার বিষয়, কী বলব, বুঝতে পারছি না।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ভুক্তভোগীর শিশুর পরিবার এসে দেখা করেছেন। একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তা ছাড়া যেহেতু একটি মামলা করা হয়েছে, মামলাটি রাষ্ট্রীয় আইনি প্রক্রিয়ায় চলমান থাকবে।
মানববন্ধনে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রিজাউল করিম শেখ, তৌফিক আলম, সৈয়দ এম এ ছালাম, এ নাঈম ফারুকী, ছাইফুল ইসলাম, খাইরুল ইসলাম প্রমুখসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।