চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের পশ্চিম রুদুরা গ্রামে একটি সেতু রয়েছে, রয়েছে সংযোগ সড়কও—কিন্তু সবই যেন অচল। কারণ, সড়কটি এতটাই জরাজীর্ণ ও সরু যে যানবাহন চলাচল একেবারেই অসম্ভব। উন্নয়নের নামে এমন অসম্পূর্ণ প্রকল্প এলাকাবাসীর ভোগান্তিকে যেন আরও দীর্ঘায়িত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)-এর অর্থায়নে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ইছামতী খালের উপর একটি স্টিলের সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের উন্নয়ন হয়নি তখনই। পরবর্তীতে একাধিকবার বরাদ্দ এলেও কোনো ঠিকাদার কাজ নিতে আগ্রহ দেখাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেতু পার হওয়া সম্ভব হলেও উভয় পাশে কাঁচা ও ইটের কংক্রিটে তৈরি সরু রাস্তা দিয়ে যাত্রী বা রোগী পরিবহন তো দূরের কথা, স্বাভাবিক হাঁটাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। একই সড়কের অন্য অংশে একটি বাঁশ-লাকড়ির সাঁকো দিয়ে এখনো মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পশ্চিম রুদুরা থেকে রুদুরা পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা। বর্ষা মৌসুমে কাদামাটি ও পানি জমে চলাচল একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা সড়ক পাকা করার দাবি জানিয়ে আসছি। সড়কটি নির্মিত হলে অন্তত তিনটি গ্রামের মানুষ উপকৃত হবে। রোগী পরিবহনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।” তিনি আরো বলেন, রাস্তার দুরবস্থার কারণে রোগীকে হাসপাতালে নিতে বিকল্প রাস্তায় যানজটে পড়তে হয়, এতে অনেক সময় দেরিতে পৌঁছানোর কারণে বড় ধরনের সমস্যা হয়।”
তাসনুভা নামের একজন স্কুল শিক্ষার্থী জানায়, “প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষায় কাদায় পড়ে যাই, বই-খাতা নষ্ট হয়। পাকা রাস্তা হলে পড়াশোনায় আর সমস্যা হতো না।”
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, “সম্প্রতি সড়কটি পরিদর্শন করেছি। উন্নয়নের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নতুন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
বছরের পর বছর ধরে চলা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে স্থানীয়রা দ্রুত পাকা সড়ক নির্মাণের দাবি জাদনিয়েছেন। সেতু নির্মাণের ২০ বছর পরও যদি সংযোগ সড়ক না থাকে, তাহলে এটি উন্নয়ন নয়—প্রহসন বলেই মনে করছেন অনেকেই।