সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পাকা সড়ক গুলোতে অবাধে ধান মাড়াই, ধান ও খড় শুকানো হচ্ছে। প্রধান সড়কের অর্ধেক রাস্তা খর ও ধান দিয়ে ব্লক করা হয়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সব রকমের যানবাহন।
উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। সকাল হলেই বিশেষ করে দেশীগ্রাম, তালম, মাধাইনগর
গ্রামের কৃষষকরা ক্ষেত থেকে ধান কেটে রাস্তায় মাড়াই করে ও রাস্তার উপরে দু`পাশেই ধান ও ধানের খড় শুকাচ্ছেন বিকাল অব্দি। আর বিকাল থেকে শুরু হয় রাস্তায় ঢেলে দেওয়া ধান বস্তায় করে তুলে বাড়ি নিয়ে যাওয়া। খর গুলোকে জরো করে রাস্তার পাশেই বড় বড় স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। শুকিয়ে গেলে অনেকে আবার বাড়িও নিয়ে যান। বিগত কয়েক বছর ধরে এভাবেই বিভিন্ন ফসল মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন স্থানীয়রা কৃষকরা।
প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে এভাবে রাস্তাগুলোর অর্ধেক জায়গা দখল করে ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। তাতে এসব সড়কে গাড়ি চলাচলের রাস্তা সরু হয়ে যায়। গাড়ি অভারটেকিং করাসহ নানা ধরনের সমস্যা হয়। ফলে সড়কে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির কারনে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এতে অনেকের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়কে চলাচলকারীরা ও গাড়ি চালকরা। রাস্তা থেকে এসব দ্রুত অপসারণ করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তারা।
সড়কে যেন এভাবে কোন ফসল শুকানো না হয় সে বিষয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে রাজু নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, `রাস্তার উপর দু`পাশে বিভিন্ন সময় ধান,গম, ভূট্টা, ধানের খর শুকানোর ফলে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
অটোরিকশা গাড়ী চালক রাশিদুল ইসলাম বলেন, এভাবে রাস্তার উপরে ধান ও খর শুকানোর ফলে গাড়ির ব্রেক ঠিকভাবে ধরে না গাড়ি স্লিপ করে চলে যায়। এভাবে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে ফলে মানুষ আহত ও নিহত হন।
মোটর সাইকেল আরোহী মনিরুল ইসলাম বলেন, সড়কে অবাধে ধান ও খর শুকানোর ফলে অনেক মানুষের বিপদ হচ্ছে। এ বিষয়ে জরুরিভাবে প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
সুমন ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘ধান খড় দিয়ে রাস্তায় মরণ ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এভাবে এক্সিডেন্ট করে মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করছে।
জীবনের ঝুঁকি থাকলেও বাড়িতে জায়গা সংকটের কারণে কৃষকরা বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর ধান মাড়াই করে ধান ও খড় শুকাচ্ছেন বলে জানান তারা।
লুৎফর রহমান নামে এক কৃষকের কাছে রাস্তায় ধান ও খর শুকানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়িতে জায়গা নেই। তাই উপায়ান্তর না পেয়ে রাস্তায় ধান শুকাচ্ছি।,
আইয়ুব আলী নামে এক কৃষক বলেন, বাড়ি অনেক দূরে তাই রাস্তায় ধান মড়াই করছি। এজন্য জীবনের ঝুঁকি থাকলেও ও কষ্ট হলেও ধান ও খর রাস্তায় শুকাইতে হচ্ছে।,
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা বলেন, রাস্তার উপর ধান শুকানোর কোনো সুযোগ নেই। রাস্তায় ধান ও খড় শুকানোর ফলে দুর্ঘটনা ঘটে। কৃষকদের সচেতন করা হবে। যাতে তারা রাস্তায় ধান ও খড় না শুকায়।