নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গে নিরাপদ খাদ্য জড়িত। এসডিজি সূচকে বিশ্বের ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। তাই সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য। কিন্তু খাদ্য যদি নিরাপদ না হয় তবে তা বহু রোগের কারণ হতে পারে। কারণ অনিরাপদ খাদ্যে গ্রহণে ডায়রিয়া থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত প্রায় ২০০ ধরনের রোগ হতে পারে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ ও বিধি-প্রবিধি সর্ম্পকে অবহিতকরণ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল রউফ মামুন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য বাস্তবায়ন বর্তমান সরকারের একটি চ্যালেঞ্জ। সে লক্ষেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশের আট বিভাগে মান সম্মত ৮টি ল্যারেটরী নির্মাণ করা হবে। যেখানে বিভাগের আওতাধীন সকল জেলা ও উপজেলার খাদ্যসামগ্রী পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। আর তখন খাদ্যে ভেজালের পরিমাণ অনেক কমে যাবে।
ভেজাল খাদ্য নির্মূলে সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে জানিয়ে সেমিনারে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, জনসচেতনতায় গণমাধ্যম সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও আমরা নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে সকলকে সচেতন করার চেষ্টা করছি, তারপরও গণমাধ্যম তাদের বিভিন্ন রিপোর্টের মাধ্যমে ভেজালমুক্ত এবং নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে সচেতন হতে জনগণকে সহজেই সজাগ করতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে সেমিনারে ড. ইকবাল রউফ জানান, জানান, ২০২০ সালে প্রতি ১০ জনে ১ জন অনিরাপদ খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। একই কারণে বছরটিতে প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। দেশের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে করণীয় সম্পর্কে ইকবাল রউফ বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাজের পরিধি সুনির্দিষ্ট করতে হবে। খাদ্য পরিদর্শনে সমন্বয় করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য আইনের শাস্তি ও জরিমানার সঙ্গে অন্যান্য আইনের সমন্বয়ের তাগিদ দেন তিনি। বিজ্ঞান-ভিত্তিক স্বতন্ত্র বিধি-প্রবিধি প্রণয়ন পরামর্শ দিয়ে সংস্থাটির সাবেক এই সদস্য জানান, ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণ করা জরুরি। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে খাদ্য উৎপাদনকারীর করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। খাদ্য পরিদর্শনে পরিদর্শকদের করণীয় নির্ধারণ ও হোটেল রেস্টুরেন্টে নিরাপদ খাবার নিশ্চিতকরণে প্রবিধি প্রণয়ন করার কথা জানান। একইসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত ও পথ-খাবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রবিধি প্রণয়নের তাগিদ দেন তিনি।