স্ত্রী’র পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ভাষা সৈনিক আলহাজ্ব জহিরুল হক। আজ শুক্রবার (১০ অক্টোম্বর) বাদ জুম্মা’আ পৌর শহরের সরকারি কে.বি.পাইলট মডেল হাই স্কুল মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় পৌর কবরস্থানে স্ত্রী’র পাশে তাকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে নানান রোগে ভুগছিলেন তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোম্বর) দুপুর আনুমানিক ১২ টা ৩০ মিনিটে বার্ধক্য জনিত কারণে দীর্ঘ দিন শর্ষ্যসায়ী অবস্থায় নিজ বাস ভবনে তার মৃত্যু হয়। জানা যায়,১৯২৮ সালে জহিরুল হক কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সহ নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক ধর্মীয় ও শিক্ষা মূলক কর্মকান্ড ও রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তার চার ছেলে ও ছয় মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মাতৃভাষা বাংলার জন্য রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছিলেন জহিরুল হক। সেই সময়কার কেবি স্কুলের (বর্তমানে সরকারি কাদির বক্স উচ্চ বিদ্যালয়) শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করেন তিনি।পরে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগান দিয়ে শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেন। বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাড়িতে শুয়ে-বসেই সময় কাটতো তার। কিশোরগঞ্জ জেলায় যে কয়েকজন ভাষা সৈনিক ছিলেন, তাদের মধ্য জহিরুল হকই শুধু জীবিত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছরেও রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পাননি এ গুণী ব্যক্তি। গত ২০২২ সালে জাতীয় দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন পত্রিকার ভৈরব-কুলিয়ারচর প্রতিনিধি সাংবাদিক সোহানুর রহমান সোহান “জীবিত থাকতে প্রাপ্য সম্মান চান ভৈরবের ভাষা সৈনিক জহিরুল হক ” শিরোনামে সংবাদটি দৈনিক ঢাকা প্রতিদিনে প্রকাশিত হলে বিষয়টি সকলের নজরে আসলে স্থানীয় ভাবে কয়েকটি সমাজিক সংগঠন তাকে ভাষা সৈনিকের সম্মাননা প্রদান করেন। এই দিকে গুণি এই ভাষা সৈনিকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বিএনপিও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল , এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন।