রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার চিকলী নদীর ভীমপুর শাইলবাড়ী-দর্জিপাড়াঘাটে ব্রিজ না করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ১২ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। ওই এলাকার বাসিন্দারা সারাবছর নিজস্ব উদ্যোগে নির্মিত নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ কলেজ মসজিদের ইমাম মন্তাজ উদ্দিন বলেন, হামার কষ্ট ক্যাও দ্যাখে না বাহে, হামার কষ্ট হামরায় বুঝি।
জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আলমপুর ইউনিয়নের ভীমপুর শাইলবাড়ী-দর্জিপাড়া খেয়াঘাট। এই ঘাটের দুই পাড়ে দর্জিপাড়া, সেনপাড়া, চকতাহিরা, খ্যানপাড়াসহ ১২ গ্রাম আছে।
এলাকাবাসী বছরের পর বছর ধরে চিকলী নদী পারাপরের জন্য চাঁদা তুলে ওই ঘাটে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করলেও বর্ষাকালে রাক্ষুসে চিকলী নদীর পানি বেড়ে সেটি ডুবে যায়। তখন নৌকা বা কলাগাছের ভেলাই তাদের একমাত্র ভরসা।
ভীমপুর শাইলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় ১২ গ্রামের মানুষকে প্রতি বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শত শত শিক্ষার্থী চার কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরে তাদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে যেতে হয়।
এদিকে ব্যবসার জন্য প্রায় প্রতিদিনেই দিলীপ সেনকে উপজেলা সদরে যেতে হয়। কিন্তু গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলা চিকলী নদীর শাইলবাড়ী ঘাটে ব্রিজ না থাকায় তার মতো অনেক ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঘাটে বাসের সাঁকো তৈরি করা হলেও যান চলাচল করতে পারে না। এ জন্য উপজেলা সদরে আসতে তাদের ১০-১১ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়।সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লোকজন বাইসাইকেল ও মালামাল কাঁধে নিয়ে অতিসতর্কভাবে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছেন।
এ সময় কথা হয় আলমপুর ইউনিয়নের গ্রামপুলিশ সদস্য ও ভীমপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিয়ার রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রত্যেক দিন বাইসাইকেল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয়। অতিরিক্ত ৮ কিলোমিটার বেশি পথ না ঘুরে তিনি নিজের বাইসাইকেলটি কাঁধে নিয়ে সাঁকো পার হয়ে পরিষদে যান।
দর্জিপাড়া গ্রামের আদর্শ কৃষক আবু বক্কর বলেন, দ্যাশত ব্রিজ, সড়ক কতই না তৈরি হয়ছে, কিন্তুক হামার পুল কোনায় হয়ছেল না। এই পুল কোনার জন্য হামরা সবজি-ধান হাট নিগিবার পাইছোল না।
শাইলবাড়ী মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি আবুল হাসান বলেন, চিকলী নদী ভাঙনরোধে ও ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংসদসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী আহাম্মেদ হায়দার জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বরাদ্দের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।