পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীতে ব্যাঙের ছাতার মতো অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। এই অপরিকল্পিত ইট ভাটার কারণে প্রতিনিয়ত পরিবেশ যেমন হারাচ্ছে বৈচিত্র্য এবং বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। পটুয়াখালী সদর উপজেলার ১০নং মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বাজার ঘোনা গ্রামে এমনি অপরিকল্পিতভাবে অহন ব্রিকস ফিল্ড নামে একটি অবৈধ ইটভাটা চলছে বহু বছর ধরে। যার এক কিলোমিটারে মধ্যেই রয়েছে হাই স্কুল, সরকারি প্রাইমারী স্কুল এবং বাজার সহ বসতবাড়ী। এই ইটভাটার চারদিকে ফসলী জমি এবং গুছানো পরিবেশ প্রকৃতি থাকলেও কাঠ পোড়ার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় অধিকাংশ ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ।
অহনা ব্রিকস ফিল্ড নামে এই ইট ভাটাটির মালিক দক্ষিণ বাজার ঘোনা মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন সিকদার। এই ইটভাটার নেই সরকারি কোনো লাইসেন্স বা পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্র। সরেজমিনে দেখা যায়, কয়লার পরিবর্তে বেআইনীভাবে কাঠ দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে ইট। এবং গাছ ও কাঠ কাটার জন্য ভাটায় স্থাপন করা হয়েছে একটি স্ব-মিল। ভাটাটি অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন লোকদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে প্রতি বছর ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে কোটি টাকার মালিক বনে গেছে বশির উদ্দিন। ইটভাটার কাছাকাছি বাজারগোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দক্ষিণ বাজারগোনা আলহাজ¦ আসমত আলী জুনিয়র হাইস্কুল ও দক্ষিণ বাজারগোনা আমিনিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা অবস্থিত। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভাটাটির কাছাকাছি থাকায় প্রায় এক হাজারের মতো শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকির মুখে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক এর বরাবরে মেসার্স অহন ব্রিকস্ নামের ইট ভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেন। ওই অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে পত্রে স্বাক্ষর করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিসিয়াল মুন্সিখানার সহকারী কমিশনার মানস চন্দ্র দাস।
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক গাজী বলেন, অহন ব্রিকস ফিল্ডে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে গাছপালা। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে (২০১৩) নিষেধ থাকা সত্ত্বেও এই ইট ভাটা স্থাপন করা হয়েছে লোকালয় তথা মানুষের বসতবাড়ি, স্কুল-কলেজ, গ্রাম-গঞ্জের অতি সন্নিকটে। আমরা বার বার বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো সুফল পাইনি। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ইটভাটার সন্ধান পাওয়া গেছে। এসকল ইটভাটা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই পর্যায়ক্রমে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অধিকাংশ ইটভাটা ধ্বংস করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও অভিযান পরিচালনা অব্যহত থাকবে।