ডেস্ক রিপোর্ট: টানা দুই মাস গরম আর বৃষ্টিহীন ছিল প্রকৃতি। অবশেষে স্বস্তি হয়ে এসেছে বৃষ্টি। দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া বৃষ্টি আগামী কয়েক দিন টানা চলবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে দেশের ভেতরে যতটা না বৃষ্টি হতে পারে, দেশের উজানে ভারতীয় অংশে বৃষ্টি বেশি হবে বলে জানিয়েছে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে দেশের হাওরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের বন্যা বিপদ না হয়ে আশীর্বাদ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ইতিমধ্যে হাওরের সিংহভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। এখন সেখানে বন্যার পানি প্রবেশ করলে খুব বেশি ক্ষতি নেই। বরং নদীর পানি আসায় সেখানকার মৎস্যসম্পদের জন্য তা নতুন প্রাণ জোগাবে। পানির ঢল যদি মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে, তাহলেই কেবল কিছুটা জনভোগান্তি তৈরি করবে। তবে এই ঢল দু–তিন দিনের বেশি স্থায়ী হবে না বলে মনে করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ১৫ মে পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে সুরমা, কুশিয়ারাসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে ওই নদীগুলোর তীরবর্তী এলাকায় হঠাৎ বন্যা দেখা দিতে পারে। আগামী কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হতে পারে। এতে উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর মধ্যে তিস্তা, ধরলাসহ কয়েকটি নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। তবে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে যাওয়ার আশঙ্কা কম।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, এবার তাপমাত্রা বেশি থাকায় দেশের বেশির ভাগ এলাকায় ধান স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এক সপ্তাহ আগে পেকেছে। আর এখনো তেমনভাবে বৃষ্টি শুরু না হওয়ায় কৃষকেরা দ্রুত ওই ধান কাটতে শুরু করেছেন। অন্যান্য বছর মে মাসে ৪০ শতাংশের বেশি ধান কাটা হয় না। এবার এরই মধ্যে বোরো ধানের ৬৫ শতাংশ কাটা হয়ে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এবার কৃষকদের যন্ত্র দিয়ে ধান কাটার ব্যাপারে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিচ্ছি। এ কারণে দ্রুত ধান কাটা হয়ে যাচ্ছে। আশা করি, হাওরের মতো উত্তরাঞ্চলেও বন্যা শুরুর আগেই সব ধান কাটা হয়ে যাবে।’