ডেস্ক রিপোর্ট: দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া অদৃশ্য ভাইরাসটি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্ত এবং আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ক্রমেই বেড়ে চলছে সারাদেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ভাইরাসটি, যা গত সাত মাসের মধ্যে একদিন সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা নয় হাজার ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে অদৃশ্য এই ভাইরাসটিতে।
একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৫৮ জনের দেহে। তাদের নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের ২২৪টি সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ২৬ হাজার ৬৭১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগেরসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৬ হাজার ৯৩১টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৩ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।
একই সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই হাজার ২১৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ৩৯৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৫২ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৮ জন ও নারী ১৪ জন। তাদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব এক, ত্রিশোর্ধ্ব পাঁচ, চল্লিশোর্ধ্ব আট, পঞ্চাশোর্ধ্ব আট ও ষাটোর্ধ্ব ৩০ জন।
বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মৃত ৫২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৩৪ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহীতে তিনজন, খুলনায় তিনজন, সিলেটে দুজন ও রংপুর বিভাগে একজন।
২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণা আসে ১৮ মার্চ।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে পাঁচ সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এদিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।