ডেস্ক রিপোর্ট : গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।
করোনা আক্রান্ত ফকির আলমগীরকে গত ১৫ জুলাই রাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল।
ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তার বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউ ইউনিটের ইনচার্জ ডা. আমিনা সুলতানা তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
কয়েক দিন ধরে জ্বর ও খুসখুসে কাশিতে ভুগছিলেন ফকির আলমগীর। পরে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। করোনার নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়ে। ওইদিন থেকেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।
বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ছিলেন ফকির আলমগীর। গণসংগীত ও দেশীয় পপসংগীতে তার রয়েছে ব্যাপক অবদান। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।
জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সংগীত বলয়ে প্রবেশ করেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘ও সখিনা গেছোস কিনা ভুইলা আমারে’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’। ‘আবহমান বাংলার লোকসংগীত’ নামে গতবছর একটি বইও লিখেছেন তিনি।