শামীম আহমদ তালুকদার, সুনামগঞ্জ থেকে:
সুনামগঞ্জের ছাতকে চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেছ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আসামি গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে দোয়ারাবজার উপজেলার নরসিংপুর গ্রামের, বর্তমান দক্ষিণ বাগবাড়ী (লেবার পাড়া) মৃত. রাশিদ আলীর ছেলে তাজুল মিয়া খসরু (৫৫) ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫)। গত রোববার গভীর রাতে ছাতক পৌরসভার দক্ষিণ বাগবাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩ মার্চ গভীর রাতে উপজেলার লাফার্জঘাটের দক্ষিণ পাশে দক্ষিণ বাগবাড়ী হাওরে অজ্ঞাতনামা খুনি চক্র অজ্ঞাত নামা ১৩-১৪ বছরের এক কিশোরকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ধার্য্য পদার্থ দিয়ে মুখ মন্ডলসহ শরীর পুড়িয়ে দিয়ে লাশটি লোক চক্ষুর আড়ালে ফেলে রেখে যায়। পরদিন সকালে বিকৃত করা লাশটি দক্ষিন বাগবাড়ী এলাকার হাজী বাবুল মিয়ার পতিত জমিতে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশে খবর দেন। ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিনের নিদের্শে এসআই মাসুদ রানা মৃত. কিশোরের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এঘটনায় মৃত. কিশোরের কোনো পরিচয় বা হত্যার কোনো ক্লু না পাওয়ায় এসআই মাসুদ রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা নং-০৬ দায়ের করা হয়। এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পার এসআই আসাদুজ্জামান। এসআই আসাদুজ্জামান প্রায় দুই মাস তদন্ত করার পর ও মামলার রহস্য উদঘাটন ও মৃত. কিশোরের পরিচয় শনাক্তসহ তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের নির্দেশে মামলার পরবর্তীতে তদন্তের দায়িত্ব পান সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান।
সুনামগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, এএসপি সার্কেল (ছাতক) মো. বিল্লাল হোসেন, ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন এর নির্দেশনায় মাত্র একসপ্তাহের মধ্যেই তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান চাঞ্চল্যকর ক্লু-লেস হত্যা মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও মৃত. অজ্ঞাতনামা কিশোরের পরিচয় সনাক্ত করিতে সক্ষম হন। মৃত. কিশোর মৌলবীবাজার জেলার জুড়ি থানা এলাকার। তার নাম সাব্বির হোসেন (১৩-১৪)।
অবশেষে রোববার রাতে সেকেন্ড অফিসার এসআই হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই উজ্জল মিয়া, এএসআই মোহাম্মদ আলী ও সঙ্গীয় ফোর্স তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেন। ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ দূরে দক্ষিণ বাগবাড়ী (লেবারপাড়া) এলাকার আসামি তাজুল মিয়ার (খসরু) বসতঘরে কিশোর সাব্বির হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যা ও লাশ ধার্য্য পদার্থ দ্বারা পুড়িয়ে বিকৃত করা এবং লাশ ঘুম করার ঘটনায় জড়িত থাকায় তাজুল মিয়া ( খসরু) ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃতরা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।