এসএম দেলোয়ার হোসেন
দেশে টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করার পরে এখন অপেক্ষায় রয়েছেন কোটি মানুষ। এদের মধ্যে কেউ কেউ দুই মাসের বেশি আগে নিবন্ধন করলেও এখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন বার্তা পাননি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কেন্দ্রগুলোতে বরাদ্দ টিকার চেয়ে নিবন্ধনের করেছেন কয়েকগুণ বেশি মানুষ। এর ফলে এই ভোগান্তি হচ্ছে। তবে যারা নিবন্ধন করেছেন তারা সবাই টিকা পাবেন। প্রথম দিকে টিকা নিতে অনেকেরই অনীহা ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় আগে টিকা নিতে যারা অনাগ্রহী ছিলেন, তারাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন টিকাকেন্দ্রে। আজ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর-২০২১) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, দিনে দিনে রেজিস্ট্রেশন বাড়লেও এখন আর মিলছে না টিকা। আগে রেজিস্ট্রেশনের পর পরই এসএমএস’র মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হতো টিকার নেয়ার তারিখ। এখন নিবন্ধনের দেড়-দুই মাস পরও এসএমএস পাচ্ছেন না অনেকেই। অনেকেই আবার অভিযোগ করেন, টিকা কেন্দ্রে যাদের পরিচিত থাকলে আগেভাগেই সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে। মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ঢাকা প্রতিদিনকে বলেন, প্রায় ৩ মাস আগে আমি টিকা পেতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছি। আমার টিকা কেন্দ্র কামরাঙ্গীরচরের কুড়ারঘাটস্থ ৩১ শয্যা হাসপাতাল। নানা হয়রানির পর গত আগস্টের প্রথম দিকে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছি। টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের দিন দায়িত্বরত নার্সরা আমার কার্ডে ১ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের তারিখ উল্লেখ করে দেয়। কিন্তু গত ১ তারিখ থেকে আজ ৬ তারিখ পর্যন্ত কাজকর্ম ফেলে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে ওই কেন্দ্রে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। নার্সসহ হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরাও কোন সদুত্তোর দিচ্ছে না। বলেছে, তারিখ লেখা থাকলেও কাজ হবে না। এসএমএস পাঠানো হবে। তবে কবে নাগাদ এসএমএস পাঠানো হবে তা কেউ বলছে না। এভাবে প্রতিদিনই টিকা কেন্দ্রে গিয়ে ফিরে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এসএমএস’র অপেক্ষায় থাকা ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গেল ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান শুরু হয়। টিকা সংকটের কারণে কিছুদিন টিকাদানে ধীরগতি থাকলেও গত ৩০ জুন নিবন্ধন কার্যক্রম দ্বিতীয় দফায় উন্মুক্ত করে সরকার। একই সঙ্গে টিকা নিবন্ধনের বয়সসীমা কমানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র বলছে, গত ২ আগস্ট পর্যন্ত ১ কোটি ৬১ লাখ ৮ হাজার জন টিকাপ্রত্যাশী নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই নিবন্ধন করেছেন গত এক মাসে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএসের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, টিকা নিবন্ধনের বয়স কমিয়ে আনার পর থেকেই ব্যাপক হারে টিকার নিবন্ধন হচ্ছে। নিবন্ধনের তালিকা অনেক লম্বা হয়ে আসছে। এক কেন্দ্রে দৈনিক ২০০ জনের টিকা দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও নিবন্ধন হচ্ছে অনেক বেশি। সে ক্ষেত্রে এসএমএস আসতে একটু দেরি হচ্ছে। উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা নিবন্ধন করেছেন, তারা সবাই টিকা পাবেন। টুডে অর টুমরো এসএমএস আসবে। টিকা নিবন্ধনকারীদের কারোই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।