নাসির উদ্দিন, ভূঞাপুর থেকে:
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ক্রমেই ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বৃদ্ধি পেয়েছে যানবাহনের চাপ। মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কে গাড়ি ধীর গতিতে চলাচল করছে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গন্তব্যের অপেক্ষায় শত শত মানুষ। যাদের অধিকাংশই মানুষ নিম্নআয়ের। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মহাসড়কের এলেঙ্গা বিরতি রিসোর্ট এলাকায় দেখা গেছে সড়কের দুই পাশে গন্তব্যের অপেক্ষায় কয়েক শতাধিক মানুষ। যাদের অধিকাংশ ধানকাটা শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদেরই একজন আমেনা বেগম। পঞ্চগড়ের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামীসহ কাজ করেন ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকার একটি পোল্টি ফার্মে। এক বছর ধরে বাড়ি যান না তারা। তাই ছুটি পেয়ে বাড়ি যাবার লক্ষে মধ্যরাতে ভালুকা থেকে বিভিন্ন পন্থায় স্বামী ও ছয় বছরের শিশু সন্তানসহ সকাল ৬টায় এসে পৌঁছান এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। প্রায় সাড়ে ৫ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোন যানবাহন ব্যবস্থা করতে পারেনি স্বামী। কারণ মাইক্রোবাসে জনপ্রতি ভাড়া হাকাচ্ছেন ৪হাজার টাকা আর ট্রাকে ১হাজার টাকা। এই টাকা ভাড়া দিয়ে বাড়ি যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছিলেন আমিনা বেগম। এখন তার চোখেমুখে ক্লান্তি আর হতাশা। কেবল তিনি নন, তার মতো প্রায় কয়েক শতাধিক ধানকাটা শ্রমিকসহ অন্য নিম্নআয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তেমনি পঞ্চগড়ের কাজলদিঘী একলাকার সুকুমার রায়, মফিদুল, জুলহাসরা ১৫দিন আগে এসেছিলেন ধানকাটা শ্রমিক হিসাবে। এখন কাজ নেই তাই বাড়ি ফিরে যাবেন কিন্তু গাড়ি না পেয়ে তারাও পড়েছেন চরম বিপাকে। ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহনের হাকানো ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাবার সাধ্য তাদের নেই। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, বড়লোকরা অনেক টাকা দিয়ে হাইচয়েজ ভাড়া করে যেতে পারছে। আমরা কিভাবে যাবো। আমরা এখানে কোথায় থাকবো, কী খাবো? তাদের দাবী বাস চললে কম টাকায় তারা বাড়ি যেতে পারতাম। এখন কী হবে জানিনা। আন্তঃজেলায় গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশ দিলেও তা মানা হচ্ছে না। কিছু কিছু দূরপাল্লার গণপরিবহন রাতের অন্ধকারে চলাচলের অভিযোগ রয়েছে। আর আন্তঃজেলায় চলাচলরত গণপরিবহণেও মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। দাঁড়িয়ে ও গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহণ করছে তারা। যানজট নিরসনসহ বিধি মানাতে মহাসড়কে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ে গতি বাড়াতে মোটরসাইকেলের আলাদা দুটি লেন চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।