খন্দকার আনিসুর রহমান, সাতক্ষীরা থেকে:
সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় লকডাউনের মধ্যেও করোনা সংক্রমন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৭ জনের করোনা পরীক্ষা শেষে ১০৩ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। যা শনাক্তের হার ৫৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৯৮৯ জন। আর ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৪৮ জন। এদিকে, করোনার উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন এক নারী ও আপন দুই সহোদরসহ আরো ৫ জন। এ নিয়ে করোনার উপসর্গ নিয়ে জেলায় মারা গেছেন আরো অন্ততঃ ২৩২ জন। মৃত ব্যক্তিরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের মনিরা খাতুন, দেবহাটা উপজেলার বদরতলা গ্রামের সুশংক, শ্যামনগর উপজেলার পাতাখালী গ্রামের আপন দুই ভাই তোহা কামাল ও শোয়েব খান এবং সদর উপজেলার হাওয়ালখালীর আবুল হোসেন।
অপরদিকে, করোনার উর্দ্ধগতি সংক্রমণ ঠেকাতে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় সাতদিনের লকডাউনের চতুর্থ দিনে প্রশাসনের তৎপরতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মোড়ে মোড়ে চলছে তল্লাশী। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে। বন্ধ রয়েছে দুরপাল্লার বাসসহ সকল ধরনের গনপরিবহন। তবে কিছু কিছু এলাকায় ব্যটারীচালিত ভ্যান, ইজিবাইক ও মটরসাইকেল চলাচল করেতে দেখা গেছে। লকডাউনের মধ্যে ওষুধের দোকানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা রয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দরেও সীমিত পরিসরে চলছে আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম। তবে ভারতীয় চালক ও হেলপাররা যাতে খোলামেলা ঘুরে বেড়াতে না পারেন সে জন্য পুলিশ ও বিজিবির নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে দোকানপাট খোলা রাখা, স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ বিভিন্ন অপরাধে জেলার বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘন্টায় ভ্রাম্যমান আদালতের ১৩টি মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৭০ টি মামলায় ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস.এম মোস্তফা কামাল। তবে, সাধারন জনগনের অভিযোগ, করোনার প্রথম দিকে প্রশাসন ব্যাপক তৎপর ছিলেন। আগে যাদের করোনা শনাক্ত হয়েছিল প্রশাসন তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে বাড়ি লকডাউন করেছিলেন। এখন আর সেটি দেখা যায়না। এছাড়া শহর ও গ্রামাঞ্চলে অবাধে মানুষ যাতায়াত করছেন। তারা কোন রকমেই মানতে চাচ্ছেননা স্বাস্থবিধি। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসন। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় ১৮৭ জনের করোনা পরীক্ষা শেষে ১০৩ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। যা শনাক্তের হার ৫৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। করোনা সন্দেহে মেডিকেলে দুই জন ও সদর হাসপাতালে এক জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরো জানান, করোনা সন্দেহে আজ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ২৩২ জন। বর্তমানে জেলায় লকডাউন চলছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ভাল রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।