ইলিয়াছ ভূঁইয়া, সীতাকুণ্ড থেকে
চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার একমাত্র ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা সীতাকুণ্ড পৌরসভা। গেল ৫ বছরে সড়ক নির্মাণ, সংস্কার, আলোকায়ন, নর্দমা, সেতু ও পুল উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও করা হয়নি সঠিক ও পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। দীর্ঘ দিন ধরে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডাষ্টবিনের ময়লা ড্রাম ট্রাকে তুলে নিয়ে ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পন্থিছিলা ও উত্তর বাজার অংশে। আর এসব ময়লা পঁচে তীব্র দূর্গন্ধের সৃষ্টিসহ ক্ষতিকর জীবাণু ও এডিস মশার উৎপাত বাড়ছে, সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এমন অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৌরবাসীর ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড পৌরসভা অংশ। বাস, ট্রাক, সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেল যেকোনো যানবাহন সীতাকুণ্ড পন্থিছিলা ও উত্তর বাজার অংশ অতিক্রমকালে যাত্রীদের পোহাতে হয় তীব্র দূর্গন্ধ। সীতাকুণ্ডের এই দুই অংশে ফেলা ময়লা-আবর্জনা থেকে সৃষ্ট দূর্গন্ধের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে এই পঁচা দূর্গন্ধ। ফলে এলাকাবাসী নানা জটিল রোগে ভুগছে। শুধু তাই নয়, পন্থিছিলা এলাকার ময়লা-আবর্জনার স্তুপ এখন বিশাল আকার ধারণ করছে। এসব ময়লা-আবর্জনা পাশ্ববর্তী কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করাসহ ছড়া ও খালের জলে মিশে বাড়ি ঘরের পুকুরে ঢুকে পরিবেশ বিনষ্ট করছে। অন্যদিকে ময়লা-আবর্জনার ফলে কৃষি জমিতে কাজ করার সময় পঁচা দূর্গন্ধ নাকে নিয়ে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কৃষক।
স্থানীয়রা জানান, সীতাকুণ্ডের যুবাইদিয়া ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার প্রবেশ মুখে এবং হাজেরা হ্যাভেন গার্ডেনের পূর্ব পাশে যে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তা পথচারী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কারণ। মাদ্রাসা, স্কুলে যাতায়াতকালে ছাত্র-ছাত্রীদের তীব্র পঁচা দূর্গন্ধ পোহাতে হয়। ময়লা আবর্জনার স্তূপের কারণে ফুটপাতে হাঁটাও কষ্টকর বলে জানান সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা ৫নং ওয়ার্ড নলুয়া পাড়া ও ১নং ওয়ার্ডের পাহাড়ের পাদদেশে সর্বমোট দুটি জায়গা নির্ধারণ করেছি ডাম্পিং স্টেশনের জন্য। মাননীয় মেয়র মহোদয়ের মাধ্যমে ডিসির কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করা হবে। জায়গাটি পেলে অতি শিগগিরই বর্জ্য স্থানান্তর করে বর্তমান জনদূর্ভোগ লাগব করতে পারবো বলে আশা করছি।
সীতাকুণ্ড পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম মহাসড়কের পাশের ময়লা-আবর্জনা ফেলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আগের মেয়রের মৌখিক নির্দেশে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। পৌরসভার নিজস্ব কোনো জায়গা নেই ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য। আমরা মন্ত্রণালয়ে কাছে চিঠি দিয়েছি, মন্ত্রণালয় থেকে যদি বরাদ্দ পাওয়া যায়, তাহলে পাহাড়ের পাদদেশে বা জনবসতি নেই এমন কোনো জায়গায় ডাম্পিং স্টেশন করা হবে। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য পৌরবাসীকে পরামর্শ দেন তিনি।