মাহফুজ ইসলাম সবুজ, বরিশাল ব্যুরো:
বরিশালে গাছে গাছে আমের মুকুল ছড়াচ্ছে সৌরভ, ঋতুরাজ বসন্তের আগেই দক্ষিণাঞ্চল সহ সহরের অলিগলিতে আমের মুকুলে সৌরভ ছড়াচ্ছে, জানান দিচ্ছে আগমনী বার্তা। শীতল বাতাসে এখন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে যাচ্ছে। শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জে সর্বত্র আম গাছগুলো তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ্গ ধারণ করে চলেছে এক অপরূপ সাজে। সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশাল নগরী থেকে শুরু করে বরিশাল সদর উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে মুকুলে ছেয়ে যাচ্ছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে মুকুলের সুবাসিত মধুমাখা ঘ্রাণ। তবে এবারও আমের ফলন নির্ভর করছে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এ বছর ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন জেলার মানুষ। আম বলতে এক সময় উত্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীকেই বোঝাতো। কিন্তু বর্তমানে বরিশাল দক্ষিণ অঞ্চলে ছোট-বড় বহু আমবাগান রয়েছে। এ বিষয় বরিশাল জেলা কৃষি অফিস জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে এই অঞ্চলে আমের মুকুল একটু দেরিতে এসেছে। তবে আমের মুকুল আসার আগে-পরে যে আবহাওয়ার প্রয়োজন, এখানও তা বিরাজমান রয়েছে। জানুয়ারি পুরো মাস এবং ফেব্রুয়ারি দুই সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। গাছে নতুন পাতা না আসা পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কিছু গাছের মুকুলে পাথরদানা দেখা যায়। তবে ক্ষতির কিছু নেই। এবার গাছে যে রকম মুকুল এসেছে পাথরদানার কারণে আমের ফলন তেমন ব্যাহত হবে না। তিনি আরও জানান, আমের ফলন বাড়াতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয় না। সংশ্লিষ্টরা একটু সতর্ক হলেই শতভাগ ফলন পাওয়া সম্ভব। সাধারণত আমের মুকুল আসার পর হোপার পোকার আক্রমণ ও অ্যানর্থাকনোজ রোগ হয়ে থাকে। এজন্য আমের গুটি মটর দানার মতো হওয়ার পর দুইবার গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে অনেককে পরামর্শ দেওয়া হয়। এদিকে নগরীর গোরস্থান রোড এলাকার শামীমা ম্যানসন এর শহিদুল ইসলাম সেলিম জানান, বাড়ির ছাদে ও আশ-পাশে বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুলে ভরে গেছে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের বেশকিছু গাছে মুকুল ফুটেছে। সেই মুুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মানুষের চোখে ভাসছে স্বপ্ন। এছাড়া বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার প্রতিনিধিদের তথ্যমতে জানা যায়, কিছু এলাকায় আম মুকুলে ডেকে যাচ্ছে ডালপালা। প্রায় বিগত বছরগুলোতে যে সব আমগাছে ফলন হতো, তা অধিকংশ গাছে মুকুলের দেখা মিলছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে যে গাছগুলোতে মুকুল দেখা যাচ্ছে না সেগুলোতেও দুই এক সপ্তাহের মধ্যে আম মুকুল আসবে বলে মনে করেন তারা।