পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও নতুন চিন্তার সমন্বয়ে সফলতার গল্প লিখছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খান মার্কেট এলাকার অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিন্স আহমেদ (২১)। পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষিকাজে মনোনিবেশ করে তিনি হয়েছেন এক সফল পেঁপে চাষি।
প্রিন্স সরকারি সা’দত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। পড়াশোনার ফাঁকে কৃষিকাজে আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। ২০২৩ সালে ইউটিউবে পেঁপে চাষ বিষয়ক একটি ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে মাত্র ৩৫টি গাছ রোপণ করে শুরু করেন তার প্রথম পেঁপে বাগান। প্রথমবারেই ভালো ফলন ও লাভ পাওয়ায় এবার আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে প্রায় সাড়ে তিনশ চারা রোপণ করেন তিনি।
মোট ৩৩ শতাংশ জমিতে প্রায় আট মাস আগে এসব পেঁপে গাছ রোপণ করা হয়। এতে তার খরচ হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে দুই মাস ধরে তিনি পাকা পেঁপে বিক্রি করছেন। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন প্রিন্স। তিনি জানান, বাজারে পাকা পেঁপের চাহিদা বেশি থাকায় তিনি কাঁচা নয়, পাকা পেঁপেই বিক্রিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন। পাইকাররা ক্ষেত থেকেই পেঁপে কিনে নিচ্ছেন—ফলে সময় ও পরিবহন খরচ কমছে। প্রতিটি পেঁপের গড় ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রিন্স আহমেদ বলেন, “ছাত্রাবস্থায় কৃষিকাজ শুরু করায় শুরুতে অনেকেই নানা কথা বলেছিল। কিন্তু আমি থেমে যাইনি। আজ সবাই প্রশংসা করছে—এটাই আমার অনুপ্রেরণা।” তিনি আশা করছেন, মৌসুম শেষে ভালো অঙ্কের মুনাফা অর্জন করবেন এবং ভবিষ্যতে পেঁপের চারা উৎপাদন ও বিক্রির পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, “সখীপুরে এ বছর প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর চাষের পরিমাণ বেড়েছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের কৃষিতে যুক্ত করতে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। পাকা পেঁপে বিক্রি করে কৃষকরা বেশি লাভবান হন।”
প্রিন্সের সাফল্য এখন স্থানীয় তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।