ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আচারগাঁও ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও অধ্যক্ষের বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় অত্র মাদ্রাসা সংলগ্ন নান্দাইল-বাকচান্দা সড়কে এক বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অধ্যক্ষ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগের ফিরিস্তি তুলে ধরেন অত্র মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সহ-সভাপতি হান্নান মিয়া, বিদোৎসাহী সদস্য আশিকুর রহমান, দাতা সদস্য সাইফ উদ্দিন খান, অভিভাবক সদস্য ফজলুল করিম ও আশিকুর রহমান (কাজল) সহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
এছাড়া ২০০৫ সালে আচারগাঁও মাদ্রাসাটি আলিম স্তরে উন্নীত হলেও জ্যেষ্ঠ সহকারী মৌলভীদের পদোন্নতি না দিয়ে অধ্যক্ষ তার আপন ভাগিনা আনিছকে আরবি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এছাড়াও, নীতিমালা লঙ্ঘন করে কেরানিকে শিক্ষক পদে পদোন্নতি এবং বিএড পাশের আগেই শিক্ষকদের এমপিওতে বিএড গ্রেড যুক্ত করার অভিযোগও উঠেছে। শুধু তাই নয় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের টিউশন ফির লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, নাজমা খাতুন নামে এক শিক্ষিকার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৮ মাসের বেতন ভাতা উত্তোলন এবং করোনাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ১৮-২০ লক্ষ টাকা খরচ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। এমনকি ২০১৩ সালে মাদ্রাসার বিআরএসকৃত ১০ শতাংশ জমি ৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন, যার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। এছাড়াও, মাদ্রাসার ৪০ শতাংশ জমি ২ লক্ষ টাকায় বন্ধক রেখে সেই টাকা উন্নয়ন কাজে ব্যয় না করারও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারীরা উক্ত অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হাইকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি এবং আত্মসাৎকৃত সকল অর্থ মাদ্রাসার কোষাগারে ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মূলত সম্প্রতি মাদ্রাসার জনবল নিয়োগকে কেন্দ্র করে একটি অসাধু চক্র তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে, এর বিপক্ষে যথার্থ প্রমাণ রয়েছে।