ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ধোপাডাঙ্গা-গাবুরদিয়া শাপলা বিলে শোভা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা ফুল। বিশাল এলাকার বিলটি এখন লাল-সাদা শাপলার অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। লাল শাপলার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছে এলাকাবাসী। সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেপাশের উপজেলাসসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিলের ধারে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা।
ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কোড়কদি ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা-গাবুরদিয়া গ্রাম। মধুখালী উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। যা লাল শাপলা রাজ্য হিসেবে পরিচিত।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৫০- ৬০ বছর বয়সী এ বিল এখন লাল-সবুজের লীলাভূমি। দূর থেকেই এর সৌন্দর্য নজর কাড়ে সবার। কাছে যেতেই মন ভুলিয়ে দেয় জাতীয় ফুল শাপলার সৌন্দর্য ও লতাপাতা গুল্মসহ লাল ও সাদা শাপলা।
কাছ থেকে দেখে মনে হবে লাল-গোলাপি মাখা অপরুপ সৌন্দর্য। প্রাকৃতিকভাবেই এই শাপলার অবারিত সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। রুপসী বাংলার এই সৌন্দর্যের প্রশংসা এখন গ্রাম ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে আসেপাশের উপজেলা গুলোতে।
বিলের পাড়ের বাসিন্দা কার্তিক কুমার জানান, বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা বিলটির আকার ও দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। বিলে দু’ধরনের শাপলা জন্মে- লাল ও সাদা রঙের। তবে লাল শাপলাই বেশি। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন মাস এ বিলে শাপলা ফোটে।
শাপলা এখন সবজি হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। শাপলা তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে এলাকার অনেকেই এ সময় জীবিকা নির্বাহ করছেন।
ডিসেম্বর মাসে শুরুর দিকে শীতের মৌসুমে যখন পানি কমে যায় তখন সব শাপলা মরে যায়। ওই সময় কৃষকরা জমি পরিষ্কার করে ইরি ধান, পেঁয়াজ ও পাট চাষ করেন। পরবর্তী বছর শাপলার গোড়া ও মোথা থেকে আবার জন্ম নেয় লাল শাপলার।
মাসুদ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সাধারণত আগস্ট-নভেম্বর পর্যন্ত এখানে শাপলা ফোটে। আর শাপলা দেখতে হলে অবশ্যই খুব সকালে যেতে হবে। কারণ বেলা বাড়তেই শাপলা ফুল নিজেকে গুটিয়ে নেয়। অনেক ইউটিউবার বিলটি ঘুরে এর চিত্র ক্যামেরাবন্দী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে জায়গাটিক ভ্রমনের স্থান হিসাবে পরিচিত করিয়ে দিচ্ছে। এতে করে ‘শাপলার অপরূপ শোভা ও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় অনেকে।
এলাকাবাসীর দাবী স্থানীয় প্রশাসন যদি লাল শাপলা বিলের দিকে একটু নজর দেন তাহলে হয়তো এখানে পর্যটকদের আনাগোনা ঘটতো।
মায়ের সাথে শাপলার বিলে ঘুরতে আসা ছোট্ট দর্শনার্থী আমাতুর রহমান সেহরিশ বলেন, ‘লাল শাপলার বিলে নৌকায় চড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোতে মজা অনেক।’
স্থানীয় চেয়ারম্যান মুকুল হোসেন রিক্ত বলেন, ‘এ শাপলার বিলটি ইউনিয়নের পরিচিতি বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে এর সৌন্দর্য ধরে রাখার চেষ্টা করা হবে।’