সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
জামালপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত, আহত ৫ যুবদলকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হতে হবে- মেজর হাফিজ চাঞ্চল্যকর গৃহবধু কাকলী হত্যা: পীরগাছায় আসামীদের গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত আনোয়ারায় এক হাজার পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার একটি রাস্তা চার বছর ধরে সংস্কারের অপেক্ষায়; বাড়ছে দুর্ঘটনা কলা ঘুষ কেলেঙ্কারি: যশোর জেলা পরিষদের কর্মকর্তা বদলি কিশোরগঞ্জে যৌতুক মামলার আসামী আটক রাজধানীর গুলশান বনানীর স্পা সেন্টার নিয়ন্ত্রণ করছেন জাবেদ, বাহার ও শহীদ আনোয়ারায় গৃহবধূর আত্মহত্যা পাইকগাছায় বিএনপি’র ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও পথ সভা অনুষ্ঠিত নান্দাইলে আচারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন সোনাতলায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩জন মাদক ব্যবসায়ীসহ গ্রেপ্তার- ৪ পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রদলে যোগদান অনুষ্ঠান আমতলী ইসলামী আন্দোলন থেকে তিন’শ নেতা কর্মীর বিএনপিতে যোগ দেওয়ার তথ্য সঠিক নয় ঢাকাগামী ট্রেন স্টপেজ ও সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন কিশোরগঞ্জে মাদক মালার সাজাপ্রাপ্ত আসামী আটক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলেই শ্রমিকদের ভাগ্য বদলাবে গোয়াইনঘাটে গণসমাবেশে হাকিম চৌধুরী কাপ্তাইয়ে বরইছড়ি সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান পালন বাংলাদেশ হবে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত দেশ : শরিফুল হক সাজু জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্যবিধ্বংসী চায়না দুয়ারি জাল বন্ধের দাবিতে জেলেবন্ধন মেট্রোরেল পিলারের বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পথচারীর মৃত্যু প্রকাশিত সংবাদে বিজিবির ব্যাখ্যা কিশোরগঞ্জে তিন প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা রাজাপুরে মা-বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিএনপি নেতা নাসিম আকন কালকিনিতে খালার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ‎তারেক রহমানের ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে গণসংযোগে আবু বকর সিদ্দিক স্পিনিং সেক্টরে সংকট: ভারতীয় সুতা ও গ্যাসের দাম প্রধান সমস্যা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে (আইইবি) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবে :আলহাজ্ব ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সালথা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে জামায়াতের সংবর্ধনা

রাজধানীর গুলশান বনানীর স্পা সেন্টার নিয়ন্ত্রণ করছেন জাবেদ, বাহার ও শহীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর গুলশান-বনানী, যেখানে দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও তারকারা বসবাস করেন, সেখানে দিনদুপুরে মাদক, দেহব্যবসা এবং ব্ল্যাকমেইলের মতো অবৈধ কার্যক্রম চলছে। নামমাত্র স্পা, বিউটি পার্লার বা রেস্টুরেন্টের আড়ালে বছরের পর বছর ধরে এসব ব্যবসা চললেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। কোনো সমাধানও দেখছেন না স্থানীয়রা। হত্যাকাণ্ডের মতো স্পর্শকাতর ঘটনা ঘটলেও থামেনি এই দৌরাত্ম্য। গতবছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে এসব স্পা সেন্টার ও শীসাবার ঘিরে গড়ে উঠেছে বিশাল একাধিক চাঁদাবাদ চক্র। যাদের বেশিরভাগই বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের ওঠতি বয়সী ক্যাডার। যাদের প্রায় প্রতিদিনই চাঁদা দিতে হয় স্পা সেন্টার মালিকদের। নিয়মিত চাঁদা না পেলে এরা স্পা সেন্টারগুলোতে গিয়ে হামলা, ভাঙচুর এমনকি গুলিও ছোড়ে। সম্প্রতি গুলশানে এ ধরনের একাধিক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

পুরো গুলশান ও বনানী জুড়ে এমন স্পা ও লাউঞ্জের সংখ্যা শতাধিক। যেগুলোর প্রায় সবই কোনো না কোনোভাবে অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত। বেশিরভাগই আবাসিক ভবনের ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চালানো হচ্ছে।

ঢাকার গুলশান-বনানী এখন খোলামেলা যৌনপল্লীতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
নারীসঙ্গ অথবা মাদক সেবন- তাও আবার নিরাপদে! সবকিছুই মিলবে একই ছাদের নিচে। বিভিন্ন বয়সি পছন্দমাফিক নারীসঙ্গের পাশাপাশি ইয়াবা, হেরোইন, দেশি-বিদেশি মদ, আইস, সিসাসহ সব ধরনের মাদক পাওয়া যায় হাত বাড়ালেই।

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান ও বনানীতে স্পা সেন্টারের আড়ালে এভাবেই চলছে দেহব্যবসা ও মাদক বাণিজ্যের জমকালো কারবার। গুলশান বনানী এলাকায় যেভাবে স্পা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে তাতে মনে হয় অসামাজিক কার্যকলাপ বৈধতার স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। মূল কথা হচ্ছে, আইনবহির্ভূত এসব কর্মকাণ্ড নির্মূল করা যাদের দায়িত্ব তারাই হয়তো চাননা নির্মূল হোক।
পুলিশের নিস্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে গত কয়েক মাসে অবৈধ এই কারবার বেড়েছে কয়েক গুণ।

বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসব নিষিদ্ধ কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে প্রসাশন মাঝেমধ্যে লোক দেখানো ধরপাকড় করে।
গুলশান বনানীর অভিজাত এলাকার এসব স্পা সেন্টারগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে, আর এম সেন্টারে,৪১ নম্বর রোডের ৭/এ বাড়িতে কুদ্দুস, ২৪ নম্বর রোডের একই বাড়িতে ৪টি ফ্লোরে হীরা ও পান্নু। ৯৯ নম্বর রোডের ৩৩/এ বাড়িতে বাহার, ৪৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়িতে পায়েল, ১৩২ নম্বর রোডে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পাশে জাবেদ, ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্টের চারতলায় রত্না। এছাড়া গুলশানে আরো অন্তত হাফডজন পা সেন্টার রয়েছে। বনানীর আওয়াল টাওয়ারের ৭ তলায় বাবুল, ২৭ নম্বর রোডে শহীদ, ১১ নম্বর রোডে জনি ও আসাদ, ৪ নম্বর রোডে রয়েছে পায়েলের স্পা সেন্টার। এর বাইরে গুলশান বনানীতে আরো অন্তত ডজনখানেক স্পা সেন্টার ও দুই ডজন সিসা বারের সন্ধান পাওয়া গেছে। ১৩২ নম্বর রোডে জাবেদের স্পা সেন্টারটি গড়ে উঠেছে স্থানীয় যুবদলের “ড” অদ্যাক্ষরের এক ক্যাডারের শেল্টারে। ওই ক্যাডারের ছত্রচ্ছায়ায় স্পা সেন্টারের আড়ালে জাবেদ করে যাচ্ছে মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম।

এসব স্পা সেন্টারে আসা অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছেন। সেন্টারের নারী কর্মীদের দিয়ে ওইসব ব্যক্তির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও করে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে ওই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে তাদের ব্ল্যাকমেইল করার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রাজধানীর অভিজাত এলাকাকে কেন্দ্র করে যৌন ব্যবসা নতুন নয়। তবে ধরন পাল্টেছে। অভিজাত এলাকার অনৈতিক স্পা সেন্টার, শিশা বার ও বিউটি পার্লারে এখন দেহ ও মাদক ব্যবসা জমজমাট। উঠতি বয়সের বিত্তবান পরিবারের সন্তানসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিই হচ্ছেন এসব সেন্টারের খদ্দের।
গ্রাহকদের নিরাপত্তা দিতে লিফটের সাথেই আটকানো থাকে কাঁচি গেট। রয়েছে পালিয়ে যাওয়ার গোপন সিঁড়িও। যাতে বাইরে থেকে মনে হয় বন্ধ।

স্পা সেন্টারগুলো তাদের ফেসবুক পেজ ও টেলিগ্রাম অ্যাপসহ ওয়েবসাইটে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করছে। বিজ্ঞাপনগুলোতে ‘আমাদের সেন্টারে নতুন চারটি মেয়ে রয়েছে’। আবার কোনো বিজ্ঞাপনে লেখা রয়েছে, ‘আমাদের কর্মীরা তরুণ এবং আকর্ষণীয়’। এমন অশ্লীল বিজ্ঞাপন দিয়ে স্পা সেন্টারগুলো গ্রাহক আকৃষ্ট করে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, একশ্রেণির ভবনমালিকও অতিরিক্ত ভাড়া হাতানোর লোভে স্পা সেন্টারগুলোকে তাদের ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়ে থাকেন। কালেভদ্রে পুলিশি অভিযানের ঝামেলা সৃষ্টি হলে তারা কোনো কিছু না জানার ভান ধরেন।

স্পা সেন্টারগুলোতে অত্যাধুনিক সয়ংক্রিয় অটোমেটিক লক সিস্টেম, সুসজ্জিত একাধিক ক্যামেরা, যেখানে রূপসী তরুণীরা অর্থের বিনিময়ে প্রতিনিয়ত খদ্দেরদের শয্যাসঙ্গী হয়ে থাকে। স্পা সেন্টার নামের অপরাধ আখড়াগুলোতে মাদক-নারীর অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়াও অবাধে চলে ব্ল্যাকমেইলিং। এসব প্রতিষ্ঠানে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে যারা ক্ষণিকের আনন্দ আয়েশ করতে যান তাদের অনেকে নানারকম প্রতারণার আশ্রয় শিকার হন ।
প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্পাই ক্যামেরার মাধ্যমে প্রত্যেক খদ্দেরের অবস্থানকালীন পুরো সময় ভিডিও করে রাখা হয়। এসব ভিডিওকে পুঁজি করে শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং।

বাড়ির মালিকদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কোনো একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েই যে কেউ শুরু করছে স্পা সেন্টারের কার্যক্রম। সিটি কর্পোরেশন থেকে থেরাপি সেন্টারের লাইসেন্স নিয়ে স্পা এর নামে চালাচ্ছে অবৈধ দেহ ও মাদক ব্যবসা। এদের বিরুদ্ধে মানবপাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে গুলশান ও বনানী থানার ওসির কাছে ফোনে জানতে চাইলে তারা কিছু বলতে চাননি।


এই বিভাগের আরো খবর