ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার সুহাতা গ্রামের সুমাইয়া আক্তার নবীনগর মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে মন খারাপ,পাসের হার কম, জিপিএ- ৫ পাওয়া যেন সোনার হরিণ। তবু এই কঠিন বাস্তবতাকে জয় করে সবাইকে তাক লাগিয়েছেন সুমাইয়া। সে এসএসসিতে ও একই ফলাফল করেছে। অভাব-অনটন তাদের সংসারে নিত্য সঙ্গী। তাই মায়ের সঙ্গে নকশিকাঁথা সেলাই করে এবং টিউশনি করে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুমাইয়ার পিতা সুহাতা গ্রামের ইজি বাইক চালাক মো. জীবন মিয়া। তার আয়ে সংসার চলে না, তাই মা পারভীন আক্তার বাড়িতে কাঁথা সেলাইয়ের কাজ করেন। ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার বিনিময়ে মানুষের অর্ডার দেওয়া কাঁথা সেলাই করে মা-মেয়ে। সুমাইয়ার কয়েকজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ায় । চাচা স্বপন মিয়ার অনুপ্রেরণায় গুঞ্জন পাঠাগারে নিয়মিত পড়াশোনা করে ।
সুমাইয়া জানায়-“আমার বাবা ঋণগ্রস্ত, অটোরিকশা চালিয়ে কিস্তি শোধ করতে কষ্ট হয়। আগামী দিনের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তায় আছি। কিন্তু আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়, প্রয়োজনে আরো পরিশ্রম করব”।
বইমজুর হিসেবে পরিচিত সুমাইয়ার চাচা হাবিবুর রহমান স্বপন বলেন-“অসম্ভব মেধাবী সুমাইয়া, দর্জি কাজ, কাঁথা সেলাই এবং টিউশনি করে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। যারা তার পাশে ছিলেন- বিশেষ করে শিক্ষকমণ্ডলী তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। মেয়েটি যেন উচ্চশিক্ষা নিতে পারে, সে জন্য সমাজের দয়ালু মানুষদের সহযোগিতা প্রয়োজন”।