গাজীপুরের শ্রীপুরে নাটকের শুটিংয়ের কথা বলে রিসোর্টে নিয়ে এক নারী মডেলকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনার দুই মাস পর পরিচালক নাসিরুদ্দিন মাসুদকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ।
এর আগে রাজধানীর উত্তরার বটতলা এলাকা থেকে গাজীপুর ডিবির একটি দল অভিযান চালিয়ে নাসিরুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ বলেন, “ঘটনার পর থেকেই নাসিরুদ্দিন মাসুদ পলাতক ছিলেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি তিনি উত্তরা এলাকায় আত্মগোপনে আছেন। পরে আমরা অভিযানে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। যেহেতু মামলার প্রধান আসামি ধর্পাক্ত হয়েছে, এখন প্রকৃত ঘটনা ও কারা কারা জড়িত—তা সামনে আসবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী পেশায় একজন মডেল। তাঁকে জানানো হয়েছিল, নাছির নাটকের পরিচালক এবং বাবর তাঁর সহযোগী। শুটিংয়ের কথা বলে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুর থেকে তাঁকে শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের ‘রাস’ নামের একটি রিসোর্টে নেওয়া হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, রাত দুইটার দিকে একটি কক্ষে আটকে রেখে নাছির, বাবর ও পরিচয়হীন আরেক ব্যক্তি পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। পরের দিন বিকেলে তাঁকে মারধর করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর আইফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার দাম প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী মডেল। তিনি বলেন,
“আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি, কিন্তু যারা সবাই মিলে আমার ওপর পৈশাচিক কাজ করেছে–তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হলে আরও ভালো লাগতো। জড়িতরা নিয়মিত আমাকে হুমকি দিত। এখন আশা করছি ন্যায়বিচার পাবো।”
তিনি আরও দাবি করেন, মামলার অজ্ঞাতনামা আসামির পরিচয় তিনি নিশ্চিত করেছেন—আবুল হাসেম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। “সে-ই আমাকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত,” বলেন মডেলটি।
ঘটনার পর ২১ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলায় নাসির (৩৫) ও বাবর (৩২) নামের দুজনকে আসামি করা হয়, পাশাপাশি একজনকে অজ্ঞাতনামা রাখা হয়। বর্তমানে প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় মামলার তদন্তে অগ্রগতি আসবে বলে আশা করছে পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।