গবাদিপশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে প্রতিবেশীকে সন্দেহ করা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে গৃহবধূ ও তাঁর কিশোরী মেয়েকে মারধর করে উল্টো ভুক্তভোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নাছিমা বেগম এক নারী সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। গতকাল শনিবার বিকেলে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বিলশিকারী গ্রামে এই সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাছিমা বেগম বলেন, গত বুধবার নাছিমার ভাই দেলোয়ার হোসেনের বসতবাড়ীর সামনে খলিয়ানে (উঠান) তাঁর চারটি গরু বাধা ছিল। ওই দিন হঠাৎ করে ওই চারটি গরুর মধ্যে একটি গাভী ও একটি বাছুর মারা যায়। তৎক্ষণাৎ ধারণা করা হয়, বিষক্রিয়ার কারনে গরু দুটি মারা গেছে। গরু মারা যাওয়ার কিছু আগে দেলোয়ারের প্রতিবেশি আলতাফ হোসেনকে গরুর আশপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাঁকে সন্দেহ করে দেলোয়ার মহাদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় অভিযোগ করে আলতাফ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরদিন সকাল ৯টার দিকে গ্রামের ভন্ডবাজার মোড়ে একটি চায়ের দোকানে এ ঘটনা নিয়ে আলতাফের খালাতো ভাই পাশ^বর্তী চকচকী গ্রামের বাসিন্দা রাজ্জাক ও রবিউলের সঙ্গে নাছিমার আরেক ভাই বেলাল হোসেন, তাঁর ছেলে সুইট ও নাহিদের কথাকাটাকাটি হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রামের মোড়ে চায়ের দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে রাজ্জাক ও রবিউলের ১৫-২০ জন লোক এসে নাছিমার আরেক ভাই ইউনুছ আলীর বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে নাছিমার ভাই বেলাল হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস ও দেলোয়ার হোসেন, ভাই বউ পরিনা, চাম্পা বেগম ও রুবিনা বেগমসহ ১০ জনকে এলাপাতাড়ি মারপিট করে গুরুত্বর জখম করে। পরিনা এ সময় তাঁর বেলালের স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা নিয়ে নাছিমার ভাই বেলাল ও দেলোয়ার থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাঁদের মামলা না নিয়ে বিরোধী পক্ষের করা মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলা গ্রহণ করে।
নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই-ভাতিজাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করে তাঁদের হয়রানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। অন্যদিকে তাঁরা প্রতিপক্ষের মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। মাঠে জমির ধান পাকার উপক্রম হয়েছে। আর কিছুদিন পরে ধান কাটতে হবে। বাড়িতে পুরুষ লোক না থাকায় জমির ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে। আমাদের বিশ^াস এ ঘটনাটা নিরপেক্ষ তদন্ত হলে আমরা এই মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পাব।’
এ বিষয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন রেজা বলেন, ‘গরু মারা যাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বিল শিকারী গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এক পক্ষের মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় যাতে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয় তা দেখা হবে।’